দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনিয়মিত খাদ্যাভাস কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এছাড়াও রয়েছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি দুর্বলতা- এইসব কারণে রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন আরও বাড়িয়ে তোলে।
বছরে এক বার গোটা পরিবারের সকলেই রক্ত পরীক্ষা করান। সেখানে প্রথমই ধরা পড়ে রক্তে কোলেস্টেরল বেশি। বয়স কম বলে আপনি প্রথমে খুব একটা গুরুত্বই দেননি। তবে প্রথম থেকে লাগাম ধরতে না পারলে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে।
এই বিষয়ে ‘ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশন’-এর দেওয়া এক তথ্য বলছে যে, বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৩৯ শতাংশ মানুষ রক্তে বাড়তি কোলেস্টেরল সংক্রান্ত হওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। অনিয়মিত খাদ্যাভাস কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ছাড়াও মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি দুর্বলতা- রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন আরও বাড়িয়ে তোলে। এই পদার্থটি ধমনীর দেওয়ালে ‘প্লাক’ হিসাবে জমতে শুরু করে। যার কারণে ধমনীর দেওয়াল পুরু হতে শুরু করে। চিকিৎসকরা বলেন, নিয়মিত শরীরচর্চা, ডায়েট ও প্রয়োজন মতো ওষুধ দিয়ে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা যায়। আবার আয়ুর্বেদ বলে মেথি ও দারচিনির মতো মশলাও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অণুঘটকের মতোই কাজ করে।
মেথি ও দারচিনির মিশ্রণ ঠিক কীভাবে কাজ করে?
পুষ্টিবিদরা বলেছেন, মেথির মধ্যে রয়েছে সহজপাচ্য ফাইবার। যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে। আবার, দারচিনির অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সামগ্রিকভাবে হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এই দুটি মশলা একত্রে ‘সিনাজেস্টিক’ প্রভাবও ফেলে। অর্থাৎ একে অপরের গুণ আরও বাড়িয়ে তোলে। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কিংবা এলডিএলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার সঙ্গে সঙ্গে শর্করার মাত্রাও বশে রাখা দরকার। সেই কাজে সাহায্য করে দারচিনি। তাই চায়ের মতো পানীয় হিসাবে বা ডিটক্স ওয়াটারের মতো নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। তবে মাত্রাছাড়া কোলেস্টেরল থাকলে খুব সহজেই তা স্বাভাবিক হবে না। ওষুধের পাশাপাশি
কীভাবে তৈরি করবেন বিশেষ এই পানীয়টি?
এক চা চামচ মেথি দানা ও এক চা চামচ দারচিনির গুঁড়ো একসঙ্গে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর ছেঁকে নিয়ে চায়ের মতো সেটি পান করুন। স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে চাইলে লেবুর রস ও মধুও মেশাতে পারেন। তাতে কোনো ক্ষতি হবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org