দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর কমান্ডাররা রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল মংডুর মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সেনা কমান্ডাররা মুসলিম নেতাদের জান্তা বাহিনীর হয়ে কাজ করার বিনিময়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত এক মুসলিম নেতা গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৯ ফেব্রুয়ারি মংডুর ময়ো থু গি গ্রামের ৫নং বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বৈঠক হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন জান্তার ডিভিশন কমান্ডার থুরেন তুন ও বিভাগীয় প্রশাসক নায়ো ও। তাদের আয়োজিত বৈঠকে স্থানীয় মুসলিম নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। -খবর ইরাবতীর।
ওই প্রতিবেদনটিতে ওই মুসলিম নেতার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বৈঠকে কমান্ডার থারুন তুন আমাদের বলেছেন যে, রাখাইনের মানুষের (বৌদ্ধ আরাকান আর্মি) কারণে আমরা মুসলিমরা চরমভাবে ভুগছি। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্র তুলে নেওয়া উচিত। এমনকি এই কমান্ডার আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, যদি আমাদের গ্রামের কাছে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় তাহলে সেনারা আমাদের গ্রামে হামলা চালাবে না। তারা কেবলমাত্র রাখাইনের গ্রামে হামলা চালাবে। সেজন্য আমরা যেনো জান্তার হয়েই কাজ করি।’
তবে বৈঠকে উপস্থিত মুসলিম নেতাদের একটি অংশ বলেছেন যে, যদি তাদের সত্যিকার অর্থে মিয়ানমারের নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হয় তাহলে তারা এই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবেন। তবে বেশিরভাগ নেতাই এই প্রস্তাবে রাজিই হননি।
ওই নেতা আরও বলেছেন যে, ‘কিছু নেতা আমাদের সত্যিকার নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে রাখাইনের মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বেশিরভাগ নেতাই। তা সত্ত্বেও সেনা কমান্ডার তাদের আহ্বান জানিয়েছেন যে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে।’
মংডুর পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আরেক অঞ্চল বুচিডংয়েও মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জান্তার কমান্ডাররা। সেখানেও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে মুসলিমদের উদ্বুদ্ধ করছেন মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর কমান্ডাররা।
এদিকে রাখাইনের মুসলিমদের হাতে জান্তা বাহিনীর অস্ত্র তুলে দেওয়ার প্রস্তাবের বিষয়টি এমন সময় সামনে এলো যখন জানা যাচ্ছে যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জান্তাকে হটিয়ে পুরো রাখাইনের নিয়ন্ত্রণই নেবে বৌদ্ধ বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
এদিকে রাখাইনে জান্তা বাহিনীর আসন্ন পতনের বিষয়ে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে বিদ্রোহীদের জোট ব্রাহারহুড অ্যালায়েন্স। এই বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী রাখাইনে একের পর এক জান্তা সেনা ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।
বিদ্রোহীদের এই জোট আরও দাবি করেছে যে, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছোট এবং বড় ক্যাম্পের সেনারা বিদ্রোহীদের কাছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করবে। যেসব ক্যাম্পের সেনারা এখনও আত্মসমর্পণ করেনি তাদের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা হামলা অব্যাহত রেখেছেন।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স সংবাদ মাধ্যমকে আরও জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। তারা আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের অগ্রসর হওয়া ঠেকাতে পথে পথে বাধাও সৃষ্টি করছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সেতু ধ্বংস করেছে জান্তা সেনারা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
Bengali 
English