দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার ওপর ১৩তম প্যাকেজ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সদস্য দেশগুলো। মস্কোকে অস্ত্র সংগ্রহে সহায়তা করা ও ইউক্রেনের শিশুদের অপহরণে জড়িত ১৯৩ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিবর্গের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অনুমোদনও দিয়েছে। এর আওতায় প্রায় ২০০ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
ইইউ এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট বেলজিয়াম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কর্মকাঠামোর আওতায় ১৩তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদনে ইইউ রাষ্ট্রদূতরা নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন।’
ইইউ কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে যে, ইইউ দেশগুলোতে কাজ করা বা ভ্রমণ নিষিদ্ধ হওয়া ১৯৩ জন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের তালিকায় যোগ হবে নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়া প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিরা। এইসব ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভ্রমণ কিংবা ব্যবসায়িক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।
রাশিয়ার সামরিক এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ইউক্রেনের শিশু অপহরণ বা পাচারে জড়িতদের বিষয়টি নজরে রেখেই নতুন নিষেধাজ্ঞার তালিকা তৈরি করা হয়। এই তালিকায় উত্তর কোরিয়া এবঙ বেলারুশের একটি করে প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
ইতিপূর্বে, গত বছরের মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌসুলি বলেছিলেন, ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চল হতে রাশিয়া কয়েকশ এতিম শিশুকে অনাথালয় ও কেয়ার হোম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেককেই দত্তকও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আইসিসি ইউক্রেনের শিশুদের অপহরণের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেই অভিযুক্ত করে আসছে। এটিকে তারা যুদ্ধাপরাধ বলেও উল্লেখ করে আসছে বরাবরই। তবে এই অভিযোগ আগে থেকেই অস্বীকার করে আসছে মস্কো। তাদের দাবি হলো, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নিরাপদ রাখতে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ইউক্রেনের অভিযোগ হলো, রাশিয়া তাদের ৪ হাজারের বেশি শিশুকে সরিয়ে নিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাশিয়ার সামরিক ক্রয়বিক্রয় বিশেষত ড্রোন তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ নেটওয়ার্কের ওপরেও নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অ্যানেক্স-৪ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ২৭ কোম্পানিকে যুক্ত করা হয়েছে। এইসব প্রতিষ্ঠানের কাছে দ্বিতীয়বার ব্যবহারযোগ্য পণ্য বিক্রয় করতে পারবে না ইউরোপীয় কোনো প্রতিষ্ঠান।
সূত্রটি জানিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ৩টি চীনা এবং ১টি হংকংভিত্তিক কোম্পানিও রয়েছে। এছাড়াও প্রায় সবগুলোই রাশিয়ান কোম্পানি।
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির সময়ের মধ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করা হবে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য , রাশিয়ার প্রায় ২ হাজার ব্যক্তি এবং কোম্পানির ওপর ইতিমধ্যেই যেসব নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে, সেগুলোও আরও ৬ মাসের জন্য নবায়ন করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূতরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org