দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রস্রাবের রং বদলে যাওয়া সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলেছেন, প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া শুধু পানি কম খাওয়ার জন্য হয়- এমনটি নয়। লিভারের কোনও গোলমাল হলেও এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
রাস্তাঘাটে থাকলে পানি খাওয়া কম হয়- সেটিই স্বাভাবিক। অপরিচ্ছন্নতার কারণে সাধারণ শৌচালয় এড়িয়ে চলেন অনেকেই। পানি কম খাওয়ার এটিও একটি কারণ। স্বাভাবিকভাবেই প্রস্রাব করতে গেলে কষ্টও হয়। এই অবস্থায় প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যায়। বাড়ি ফিরে একটু বেশি করে পানি খেলেই ঠিক হয়ে যাবে এমন ধারণা থাকে বেশির ভাগ মানুষের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু তা-ই হয়। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া শুধু পানি কম খাওয়ার জন্য হয়- এমনটি কিন্তু নয়। লিভারের কোনও গোলমাল হলেও এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতেই পারে।
লিভারের গোলমাল হলে আর কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
আপনার শরীরে বড় কোনও রোগ হয়নি, তাও দীর্ঘদিন ধরেই দুর্বলতা যেনো গ্রাস করছে। অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন আপনি। শরীরে শক্তির জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে লিভারের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তাই ক্লান্ত লাগলে কিংবা দুর্বল বোধ করলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পেটে ব্যথা হওয়া
লিভারের কোনও অস্বাভাবিকত্ব দেখলেই সতর্ক হওয়া দরকার। পেটের উপর দিকে হঠাৎ ব্যথা কিংবা যন্ত্রণা করলে সাবধান পেতে হবে। লিভারের আকারে কোনও পরিবর্তন এলে অনেক সময় পেট ফুলে যায়।
জন্ডিস
জন্ডিস সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই জানি। ত্বক, চোখ, নখের রং হঠাৎ হলদেটে হতে আরম্ভ করলেই সতর্ক হতে হবে। লিভারের কোনও সমস্যা দেখা দিলেই রক্তে ‘বিলিরুবিন’ নামক একটি উৎসেচকের পরিমাণ তখন বাড়তে থাকে। যে কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রস্রাবের রং বদলে যাওয়া
সাধারণত লিভারের কার্যকারিতা নষ্ট হলেও প্রস্রাবের রং বদলে যেতে পারে। রক্তে ‘বিলিরুবিন’-এর পরিমাণ বেড়ে গেলে প্রস্রাবের মধ্যেও সেটি মিশতে শুরু করে। হলুদ থেকে সেটি ক্রমশ লালচে হতে শুরু করে।
পেট ও পা ফোলা
পেট ও পা ফোলার সমস্যাও অনেক সময় দেখা যায়। যেমন লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিলে শরীরে তরল জমতে থাকে। আর তখন পেট ফুলে যায়, ফুলতে শুরু করে দেয় পা দু’টিও। বিশেষ করে পায়ের পাতা ও গোড়ালির দিকে খেয়াল রাখলেই সেটি বোঝা যাবে খুব সহজেই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org