দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিলেই রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়াও কোনও কারণে কিডনিতে সংক্রমণ হলেও রক্তে এই উপাদানটি বেড়ে যেতে পারে।
হয়তো কয়েক দিন ধরেই প্রস্রাবে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করছিলেন আপনি। পানি খাওয়ার পর সাময়িক স্বস্তি পাওয়া গেলেও পুরোপুরি সারছিলো না। প্রাথমিকভাবে ধরেই নিলেন যে, মূত্রনালিতে সংক্রমণ ঘটেছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো রক্ত পরীক্ষা করানোর পর জানা গেলো যে, এক ধাক্কায় রক্তে ক্রিয়েটিনিন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ কিডনি ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সাধারণ পেশি থেকে যে সমস্ত দূষিত পদার্থ বের হয়, তা কিডনি ছাঁকতে না পারলেই রক্তের মধ্যে মিশতে শুরু করে। আর তখনই শরীরে ফুটে ওঠে বেশ কিছু লক্ষণ।
কী কারণে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়তে পারে?
কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিলেই রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়াও কোনও কারণে কিডনিতে সংক্রমণ হলেও রক্তে এই উপাদানটি বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকরা বলেছেন, ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এমন কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অনেক সময় ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যেতে পারে।
কী উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
# হঠাৎ শরীরে তরলের পরিমাণ বেড়ে গেলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটিকে বলা হয়, ‘ডিসনিয়া’। কিডনি বিকল হলে এই ধরনের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
# কোনও ব্যক্তির রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলেই তিনি হঠাৎই অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করতে পারেন। খুব বেশি কায়িক শ্রম না করেও বিধ্বস্ত লাগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
# সাধারণ রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলেই বার বার প্রস্রাবের বেগ আসে। তবে এটি একমাত্র বহুমূত্র রোগের কারণ নয়। রক্তে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলেও অনেক সময় এমনটি হতে পারে।
# রক্তে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলে অনেকেরই গা গুলোয় অর্থাৎ বমি পায়। তাই গা গুলোলেই তা গ্যাস বা হজমের সমস্যা বলে ধরে নেওয়ার কোনও কারণই নেই।
# আবার অনেকক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পায়ের পাতা ফুলে যায়। আবার কিডনির গোলমালে শরীরে তরল জমতে শুরু করলেও অনেক সময় পায়ের পাতা, পায়ের গোছ ফুলে উঠতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org