দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তে পর্যাপ্ত মাত্রায় ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি থাকার পরেও যদি হাড়ের সমস্যা হয়ই, তাহলে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভালো।
শারীরবৃত্তীয় নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্যই প্রয়োজন খনিজের। গুরুত্বপূর্ণ খনিজের তালিকায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ থাকলেও ম্যাগনেশিয়ামের ভূমিকাও কিন্তু কম নয়। শরীরের ভিতর ঘটে চলা নানা ধরনের রাসায়নিক কার্যকলাপ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে প্রয়োজন হয় এই খনিজের। চিকিৎসকরা বলেছেন, রক্তে পর্যাপ্ত মাত্রায় ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকার পরেও যদি হাড়ের সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভালো। অনেক সময় কোনও কারণ ছাড়াই হঠাৎ মনখারাপ হওয়ার পিছনেও এই খনিজের হাত থাকতে পারে।
হঠাৎ পেশিতে টান
এই ধরনের সমস্যাকে খুব একটা গুরুত্বই দিতে চান না অনেকেই। সারাদিন পানি খাওয়া কম হলে, পায়ের পেশিতে হঠাৎ করে টানও লাগতে পারে। সেই সমস্যা অবশ্য সাময়িক। চিকিৎসকরা বলছেন, এমনিভাবে পেশিতে টান লাগার সমস্যা যদি নিয়মিত হয়, তাহলে তা ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতির লক্ষণও হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দন
ঘড়ির কাঁটার মতো হৃদস্পন্দেরও একটি ছন্দ রয়েছে। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের হৃদযন্ত্র সেই ছন্দ মেনেই চলে। তবে রক্তে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে কারও হৃদস্পন্দনের হার হঠাৎ কমে বা বেড়ে যেতেও পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগ ‘অ্যারিদ্মিয়া’ নামেই পরিচিত।
উদ্বেগ ও অবসাদ
তেমন কিছুই হয়তো ঘটেনি। মনখারাপ হওয়ার কোনও কারণও খুঁজে পাচ্ছেন না। তবু মনখারাপ হচ্ছেই। চিকিৎসকরা বলেছেন, এই সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম। স্নায়ুর কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে এই ম্যাগনেশিয়াম। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্টে একই কথা বলা হয়।
ভঙ্গুর হাড়
অনেকেই মনে করেন যে, হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি দু’টি উপাদানই হলো ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি। তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, এই দু’টি উপাদানের পাশাপাশি হাড়ের যত্নে ম্যাগনেশিয়াম যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম না থাকলে অস্টিয়োপোরোসিসের সমস্যা বেড়ে যেতেই পারে।
অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি
পরিশ্রম করলে ক্লান্ত লাগাটা স্বাভাবিক। ঘুম থেকে ওঠার পরও যদি ঘুম পায় কিংবা ক্লান্ত লাগে, তা সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে খুব একটা স্বাভাবিক কিন্তু নয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিই এই ক্লান্তির কারণ হতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org