দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দাঁতের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এমনকি, ক্যান্সারের মতো রোগের যোগও রয়েছে। তাহলে কীভাবে নেবেন দাঁতের যত্ন?
আপনি কী মনে করেন যে নিয়মিত দাঁত না মাজলে কেবলমাত্র আপনার দাঁতেরই ক্ষতি হচ্ছে? ধারণাটা কিন্তু একেবারেই ভুল। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দাঁতের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এমনকি ক্যান্সারেরও যোগ রয়েছে।
ভারতীয় পুরুষরা সবচেয়ে বেশি মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আর এইসব ক্যান্সারের সঙ্গে কমবেশি কোথাও না কোথাও তামাকের যোগ থাকেই। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আর এই ক্যান্সারের মূল কারণই হলো তামাক খাওয়ার অভ্যাস ও দাঁতের প্রতি অযত্ন এবং অবহেলা।
শুনতে অবাক লাগলেও, ওরাল হেল্থ অবসারভেটারির একটি সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যায়, শুধুমাত্র ৪৫ শতাংশ ভারতীয় দিনে অন্তত দু’বার করে দাঁত মাজেন। যেখানে চীন, কলম্বিয়া, ইটালি ও জাপানের মতো দেশে ৭৮ হতে ৮৩ শতাংশ মানুষ দু’বেলা নিয়ম করে দাঁত ব্রাশ করেন। এই সমীক্ষায় আরও ধরা পড়েছে যে, ভারতীয়দের মধ্যে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেকটা বেশি অন্যান্য দেশের তুলনায়। সে কারণে দাঁতের বেশি ক্ষতি হয় ভারতীয়দেরই। দাঁতের ক্যাভিটি থেকেই আলসার, শরীরে ভিটামিন বি’র ঘাটতি, আয়রণের ঘাটতির মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
দাঁতের যত্ন নেবেন কীভাবে?
প্রতিদিন দু’বার অন্ততপক্ষে দু’মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর। অবশ্যই নরম ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। ৩ মাস পর পর ব্রাশ পরিবর্তন করা দরকার। শুধু পাশাপাশি নয়, উপর-নীচে ব্রাশ করতে হবে। যে কোনও খাবার খাওয়ার পর ভালো করে পানি দিয়ে কুলকুচি করতে হবে। কুলকুচি করার সময় আঙুল দিয়ে মাড়ি মাসাজ করতে হবে। খুব মিষ্টি জাতীয় কিংবা আঠালো খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলায় ভালো। বেশি করে পানি পান করতে হবে। লেবু এবং পেয়ারা জাতীয় ফল বেশি করে খাওয়া উচিত। কারও মুখে বেশি ধারালো দাঁত থাকলে, সেটি ঘষে ঠিক করে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org