দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সকল লেনদেনের ৩০% ক্যাশলেস কিংবা ডিজিটাল মাধ্যমে হয় সেটির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তবে এই টার্গেট থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সেক্টর। এই সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে আজ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) একটি কর্মশালার আয়োজন করে।
‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ সম্প্রসারণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় অংশ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ব্যাংকের ডিজিটাল পেমেন্ট বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন ফিনটেক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা।
ক্যাশলেস পেমেন্টের চ্যালেঞ্জ হিসাবে বক্তারা যে বিষয়গুলো তুলে ধরেন সেগুলো হচ্ছে স্মার্টফোন ও অ্যাপ ব্যবহারের , ছোট দোকানদারদের ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণের ব্যাপারে অনীহা, ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহারের জটিলতা, উচ্চ ট্রান্সাকশন খরচ, বাংলা কিউ আর সংক্রান্ত কারিগরি জটিলতা, গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতার অভাব ইত্যাদি।
ফিনটেক এবং ডিজিটাল পেমেন্ট বিষয়ক বেসিস স্ট্যান্ডিং কমিটি কর্তৃক এই কর্মশালার আয়োজন করা হয় যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক মোঃ মোতাসেম বিল্লাহ ও পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ জিয়াউল হক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, ফিনটেক অ্যান্ড ডিজিটাল বেসিসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম মাশরুরের সভাপতিত্বে কর্মশালাটির সঞ্চালনা করে বেসিসের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল।
ক্যাসলেস পেমেন্ট বাড়ানোর জন্য কর্মশালায় বেশ কিছু সুপারিশ করা হয় – ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়ানোর জন্য গ্রাহক ও ক্ষুদ্র দোকানদার – উভয় পর্যায়েই প্রণোদনা দেওয়া জরুরি। ক্যাশ টাকার ব্যবহার কমানোর জন্য প্রয়োজনে ক্যাশ লেনদেনের উপর অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করা যেতে পারে। ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করতে ব্যাংক ও ফিনটেক প্রতিষ্ঠান সম্মিলত ভাবে জনসচেতনতা তৈরীতে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকগুলোকে শুধুমাত্র বড় শহরে কাজ না করে উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে কাজ করতে হবে। বাংলা কিউ আর (Bangla QR) পেমেন্ট জনপ্রিয় করতে প্রতিটি ব্যাংকে তার গ্রাহকদের জন্য মোবাইল অ্যাপ নিয়ে চালু করতে হবে। যাদের অ্যাপ আছে, সেগুলোর ব্যবহার বাড়ানোর জন্য আরো অনেক সহজ ও ইউসার ফ্রেন্ডলি করতে হবে। ছোট দোকানদাররা যাতে গ্রাহকদের থেকে নেওয়া ডিজিটাল পেমেন্ট যাতে সাপ্লায়ারদের বা পাইকারি বিক্রেতাদের ক্যাশলেস ভাবে দিতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল টাকা যাতে সহজে ক্যাশ টাকা হিসাবে উত্তোলন করা যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমের মধ্যে রিয়েল টাইম পেমেন্ট এবং ইন্টারপারেবিলিটি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক ব্যাংক এবং ফিনটেক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্যাশলেস বাংলাদেশ সম্প্রসারণে সরকারের লক্ষ অর্জনকে সফল করতে সাহায্য করার আবেদন জানান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সকল ধরণের নীতিগত সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে আশ্বাস দেন। বেসিসের পক্ষ হতে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বেসিসের সব সদস্যের পক্ষ থেকে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্যাশলেস পেমেন্টের সব ধরণের উদ্যোগে সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার দেন।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org