দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লাইব্রেরিতে দীর্ঘ ৯০ বছর ধরে সংরক্ষিত করা ছিল মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি একটি বইয়ের মলাট! এবার সেই লাইব্রেরি থেকে সরানো হলো ওই বইটি।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, উনিশ শতকের বই ‘ডেস্টিনিস অব দ্য সউল, এই মেডিটেশন অন দ্য লাইফ আফটার ডেথ’-এর বইটি বাঁধাইয়ে মূলত ব্যবহার করা হয় মানুষের চামড়া। ২০১৪ সালে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন এটি নাকি ছিল এক নারীর চামড়া!
ওই বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে, “মানবদেহের এই অংশটির একটি সম্মানজনক নিষ্পত্তির জন্য বর্তমানে ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ চলছে।”
২০১৪ সালে এক ব্লগ পোস্টে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল যে, একটা সময় মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাই করা হতো ও এটি একটি স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে পরিগণিত হতো।
ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানান যে, এই বইটির প্রথম মালিক ছিলেন লুডোভিক বোল্যান্ড নামে একজন চিকিৎসক। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ এক নারীর চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেন। পরে ওই নারী হার্ট অ্যাটাক করে মারা গিয়েছিলেন। লুডোভিক বোল্যান্ড ওই হাসপাতালেই কাজ করতেন। সেখান থেকে তিনি নারীর চামড়াটি সংগ্রহ করেছিলেন।
জানা যায়, এই বইটি লিখেছিলেন ফরাসি লেখক আরসেন হোঁসে। চিকিৎসক লুডোভিক বোল্যান্ড লেখককে একটি চিঠিতে বলেছিলেন যে, যেহেতু বইটি মানুষের আত্মা সম্পর্কে লেখা হয়েছে। যে কারণে এটি মানুষের চামড়ার মলাট পাওয়ার যোগ্য।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে হার্ভার্ড একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে তারা জানিয়েছিল যে, তাদের কাছে মানবদেহের ২০ হাজার অংশ সংরক্ষিত রয়েছে। যারমধ্যে রয়েছে খুলি, দাঁত, চুল ও হাড়গোড়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org