দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। তবে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে আসছে বর্বর ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল। এবার সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসীকে ফিলিস্তিনিরা যেনো ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে!
ভয়াবহ পরিস্থিতি যায় থাকুক না কেনো দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে সারা বিশ্বের মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।
এই বছর ঈদুল ফিতর সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য খুশি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে এলেও, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। টানা ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের কারণে ভূখণ্ডটি একেবারেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফিলিস্তিনেও উদযাপন করা হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই গোটা বিশ্বের মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। এই খবর দিয়েছে আল-জাজিরার।
প্রতিনিয়ত বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নারী-শিশুসহ প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটছে, সেইসঙ্গে রয়েছে প্রিয়জন হারানোর বেদনা। তীব্র মানবিক সংকটে অনাহার-দুর্ভিক্ষও যেনো এখন আর দূরের কিছুই নয়। এই অবস্থার মধ্যেও ফিলিস্তিনে এসেছে ঈদ। সব ধ্বংস, কষ্ট, বেদনাকে পাশ কাটিয়ে ঈদকে বরণও করে নিয়েছেন শোকগ্রস্থ ফিলিস্তিনিরা।
এমনকি ফিলিস্তিনিরা পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আনন্দ উদযাপনে রাস্তায়ও নেমে এসেছেন। অপরদিকে ঈদ উপলক্ষে আরব এবং মুসলিম দেশগুলোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে স্বাগত জানানোর জন্য ফিলিস্তিনিরা তাকবীর পাঠ করেন এবং মহান আল্লাহর প্রশংসা করে গাজার রাস্তায় নেমে আসেন।
প্রকৃতপক্ষে এবারের ঈদ গাজা উপত্যকায় এমন একটি সময় এসেছে যখন ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডটি ব্যাপক অবরোধের পাশাপাশি ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বিমান হামলা, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও খাদ্য সংকটের মধ্যে দিন যাচ্ছে।
এতোকিছুর পরও ঈদ উপলক্ষে ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছে হামাস। ঈদুল ফিতরের আগে দেওয়া ওই বিবৃতিতে হামাস গাজায় ফিলিস্তিনিদের তাদের শক্তি ও অবিচলতার জন্য অভিনন্দন জানান।
মূলত কয়েকদিন আগেই গাজার ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের আক্রমণের ৬ মাস পূর্ণ করেছে এবং সেই আগ্রাসন এখনও অব্যাহত রয়েছে।
হামাস আরও বলেছে, আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগমন উপলক্ষ্যে আরব ও ইসলামিক দেশগুলোকে অভিনন্দন জানাই।
এইসময় ফিলিস্তিনিদের জন্য ও ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসানের লক্ষ্যে সবার প্রকৃত সমর্থন বাড়তে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের এই স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org