দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি বরিশালের মানুষ ছিলেন। বরিশালের ভাষাতেই হাসাতেন কাঁদাতেন এই অভিনেতা। বিশেষ করে দীপ্ত টিভির তারকাবহুল মেগা সিরিজে অভিনয় করে বর্তমান সময়ে বেশ আলোচিত অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
মঞ্চ ও টিভি নাটকে মায়ের ভাষায় অভিনয় করেই তিনি দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এই ভাষাতেই তিনি দর্শককে হাসাতেন ও কাঁদাতেন। নাটকে তার দেওয়া বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার কিছু কিছু ডায়ালগ এখনও দর্শকদের মুখে লেগে রয়েছে। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি কাজ করেছেন সংবাদমাধ্যমেও।
বিশেষ করে তিনি বর্তমানে অভিনয় করছিলেন দীপ্ত টিভির তারকাবহুল মেগা সিরিয়াল বকুলপুর এ। এই সিরিজটিতে তিনি মোসলেম সরকার চরিত্রে অভিনয় করতেন। যদিও তিনি ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তারপরও তার অভিনয় এতোটাই ভালো তাকে দেখার জন্য সবাই যেনো উদগ্রিব হয়ে থাকতেন। সবাই যেনো এক মোসলেম সরকারের ভক্তে পরিণত হয়েছিলো। গত দিন পনের হতেই তাকে অনুপস্থিত দেখা যায় ওই নাটকে। যদিও নাটকের মধ্যে দেখানো হয় তিনি শ্বশুর বাড়ি গেছেন। আবার কখনও বলা হয়, পুলিশের ভয়ে আত্মগোপন করেছেন। তবে তিনি যে সারা জীবনের জন্য সবাইকে ছেড়ে চলে যাবেন সেটি কেও কখনও ভাবেননি। তবে সবাই জানতেন তিনি অসুস্থ্য আবার সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসবেন তার চরিত্রে। কিন্তু আর ফিরলেন না। চলে গেলেন একেবারে না ফেরার দেশে।
জানা যায়, মাসখানেক পূর্বে হঠাৎ করে রুমির শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসাও নিয়ে আসেন। সেখানে থেকে দেশে ফিরেই রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। এরপর থেকে শুরু হয় পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এক ভিন্ন উপায়, সব চেষ্টাই ব্যর্থ হলো আজ সোমবার (২২ এপ্রিল)। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন এই দাপুটে জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি।
এবং তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন রুমি। স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন তিনি।
অভিনয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় পার করেছেন রুমি। দীর্ঘ এই পথচলায় অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক এবং সিনেমায়। অভিনয়নৈপুণ্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে গেছেন এই অভিনেতা। পর্দায় তার উপস্থিতি বাড়তি আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের মধ্যে। অভিনয়ের পাশাপাশি কাজ করেছেন দেশের ঐতিহ্যবাহী জাতীয় পত্রিকা ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকাতে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org