দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন যে, মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে ফিলিস্তিন তথা গাজা ইসরায়েলি বর্বরতার হাত হতে রক্ষা পাবে না।
ইরাক সফর শেষে তুরস্কে ফেরার পথে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান এই মন্তব্য করেন। খবর: রুশ বার্তা সংস্থা তাসের।
এরদোগান বলেছেন, গত ৭ অক্টোবরের পর হতে ইসরায়েল গাজায় যেভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, আর এইসব দেখেও যারা এখনও চোখ বন্ধ করে আছেন- তারাও নিরাপদ নন। তাই সময় হয়েছে বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আমি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চাই। আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে তুরস্ক এটা অগ্রাধীকার ভিত্তিতেই করতে প্রস্তুত রয়েছে।
গাজা সমস্যা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের নিজস্ব কোনো সমস্যা ভেবে যারা নিশ্চিন্তে বসে আছেন, তাদের জন্য কিন্তু অনেক বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। এখনই সময় এসেছে নিজেদের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।
গোটা গাজাকে ধূলায় মিশিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল, চালাচ্ছে গণহত্যা, খাবার-পানি বন্ধ করে দিয়ে অনাহারে মারছে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের। গাজা পতনের পর ইসরায়েলের দৃষ্টি পড়বে প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর দিকেই।
সে কারণেই, ইসরায়েলকে থামাতে আমরা জাতিসংঘের মহাসচিবকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই। এতেও যদি ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ না হয়- তাহলে এর ব্যর্থতার দায় বিশ্ববাসীকেই নিতে হবে।
এরদোগান জোর দিয়ে বলেছেন, এখনও যদি আরব দেশগুলোর ঘুম না ভাঙ্গে- তাহলে সারাজীবন কিন্তু তাদের পস্তাতে হবে। তবে, কেও এগিয়ে আসুক বা নাই আসুক- তুরস্ক আর চুপ করে নিরপরাধ ফিলিস্তিদের ওপর চালানো নির্মম গণহত্যা চেয়ে চেয়ে দেখবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org