দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘি খেয়ে থাকেন তবে সেটি পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। তবেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। রান্নায় ঘি ব্যবহারের সময় সামান্য ভুলের কারণে শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাবও পড়তে পারে।
বাঙালিদের গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ ঘি—আর কি চাই বলুন? তবে অনেকেই আছেন যারা ঘি দিয়েই পুরো ভাত মেখে খেয়ে ফেলেন। ঘি শুধু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় তা-ই নয়, স্বাস্থ্যগুণও রয়েছে অনেক। ঘিয়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন, খনিজ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বা়ড়িয়ে তোলে, শরীরের প্রতিটি পেশি আরও শক্তিশালী করে, মেদ ঝরায়, হাড় মজবুত করে, শরীরের প্রতিটি কোষই সচল রাখে। এক চামচ ঘি জীবন বদলে দিতে পারে। সুস্থ থাকতে তাই ঘি হতে পারে অন্যতম একটি ভরসা।
পায়েসই হোক বা বিরিয়ানিই হোক— রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিতে ঘিয়ের জুড়ি নেই। তবে তার মানে এই নয়, ঘি দিয়ে রান্না করা খাবার খেলেই সুস্থ থাকা সম্ভব হবে। ইচ্ছে মতো ঘি খেলে চলবে না। খেতে হবে নিয়ম মেনে ও পরিমাণ বুঝে। তবেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। রান্নায় ঘি ব্যবহারের সময় সামান্য ভুলে শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাবও পড়তে পারে।
ঘিয়ের ধূমাঙ্ক (স্মোকিং পয়েন্ট) অনেকটা বেশি, তাই উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার জন্য ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কড়াইতে ঘি দিয়ে ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা না করাই শ্রেয়। ঘি অতিরিক্ত গরম হয়ে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করলে তা দিয়ে তৈরি খাবার শরীরের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর হবে না।
পুষ্টিবিদরা বলেন, ধূমাঙ্কের তুলনায় বেশি তাপমাত্রায় ঘি বা তেল গরম করলে ভালো ফ্যাট যেমন পলি-আনস্যাচুরেটেড ও মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো অ্যালডিহাইড, হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোপেরক্সাইডের মতো ক্ষতিক্ষারক ‘ফ্রি র্যাডিক্যালে’ পরিণত হয়ে থাকে।
এই ‘ফ্রি র্যাডিক্যালগুলো’ মানব শরীরের কোষেরও ক্ষতি করে। বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ এবং হৃদরোগের মতো ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়াও ধূমাঙ্কের তুলনায় বেশি তাপমাত্রায় ঘি কিংবা তেল গরম করলে অ্যাক্রোলিন উৎপন্ন হয়, এই যৌগ শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের এই বিষয়ে খুব সতর্ক থাকাটা জরুরি। ধূমাঙ্কের তুলনায় বেশি তাপমাত্রায় ঘি কিংবা তেল গরম করার পর তা দিয়ে তৈরি খাবার তাদের ও গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে।
ঘি কীভাবে ব্যবহার করবেন?
# কাবাবজাতীয় খাবার তৈরির সময় ঘি ভালো।
# রান্নায় ফোড়ন দেওয়ার সময় সর্ষের তেল ব্যবহার করতে হয়, এই সময় ঘি চলে না।
# ভাজাভুজির জন্য রাইস ব্র্যান তেল কিংবা সাদা তেলের ব্যবহার করা যেতেই পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org