দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার সূর্যের চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সম্ভাব্য উৎস খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা। এতোদিন তারা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সম্ভাব্য উৎস যেখানে রয়েছে ভেবেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি সেখানে ছিল না।
জটিল কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করে এই আবিষ্কার থেকে বোঝা যায় যে, সূর্যের চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটি নক্ষত্রের গভীর হতে নয় বরং সৌরপৃষ্ঠের বাইরের স্তরজুড়ে প্লাজমার অস্থিরতা হতে উদ্ভূত হয়। যেমন গবেষকরা আগে ভেবেছিলেন।
লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদন এই তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি বিজ্ঞানিদের এই অনুমান সঠিক হয়, তবে তাদের আবিষ্কার সৌর শিখা ও সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়ার আরও ভালো একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
সৌর শিখা বলতে মূলত সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের তীব্র বিস্ফোরণকেই বুঝায়। সূর্যের সক্রিয় অঞ্চলে প্রায়ই এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। যে কারণে পৃথিবীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটও ঘটতে পারে, ইন্টারনেটব্যবস্থা পঙ্গুও হয়ে যেতে পারে, এমনকি পৃথিবীতে উপগ্রহ আছড়ে পড়তে পারে।
গত ২২ মে নেচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় গবেষকরা তাদের ফলাফল প্রকাশ করেন। যদিও ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষণাবিজ্ঞানী কিটন বার্নস বলেন যে, আমি মনে করি এই ফলাফল বিতর্কিতও হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সৌর শিখার বিশাল প্লামগুলো প্রতি ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন মাইল পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারে। সৌর বায়ু থেকে চার্জযুক্ত কণাগুলো ছড়িয়ে দিয়ে একটি তরঙ্গফ্রন্টও তৈরি করে, যা পৃথিবীর দিকে এলে আমাদের গ্রহের ওপর ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সূত্রপাতও করতে পারে।
ইতিপূর্বে গবেষকরা নিশ্চিত ছিলেন না যে, সূর্যের বেশিরভাগ চৌম্বকত্বের উৎপত্তি কোথা থেকে আসে। তবে নতুন গবেষণায় সৌর ঝড়কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারার ও ভবিষ্যদ্বাণী করার আশাও প্রকাশ করেছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org