দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লাল-সবুজের পতাকা হাতে স্কাইডাইভ করে সম্প্রতি অনন্য রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী। আশিকের এই দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা সফল করতে স্পন্সর হিসেবে পাশে ছিল দেশের অন্যতম গ্রাহকপ্রিয় ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি)।
বিশ্বরেকর্ড গড়ার গৌরব উদযাপনে ৯ জুন, ২০২৪ তারিখে নিজেদের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস মিট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইউসিবি।
এই প্রেস মিটে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ কাদরীসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাগণ এই বিরল সম্মান অর্জনের পেছনে আশিক চৌধুরীর অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও নির্ভীক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। উল্লেখ্য, রেকর্ড গড়ার উদ্দেশ্যে গত ২৫ মে, ২০২৪ তারিখে ৪১,৭৯৫ ফুট উচ্চতা থেকে “হাই অল্টিচ্যুড লো ওপেনিং” (হেলো) স্কাইডাইভ করেন আশিক। বিশ্বে অ্যারোনটিক্যাল রেকর্ডের স্বীকৃতি দানকারী প্রধান সংস্থা এফএআই ওয়ার্ল্ড এয়ার স্পোর্টস ফেডারেশনের একজন বিজ্ঞ বিচারক আশিকের স্কাইডাইভটি পর্যবেক্ষণ করেন। স্কাইডাইভিংয়ের সময় আশিকের হাতে থাকা বাংলাদেশের পতাকাটির মাপ ছিল প্রায় ৭ বর্গফুট, যা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে এযাবৎ ওড়ানো সবথেকে বড় পতাকা।
রেকর্ড গড়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে পাইপার পিএ-ফরটি টু মডেলের একটি বিমান থেকে ঝাঁপ দেন আশিক চৌধুরী। দেশের পতাকা হাতে প্রায় ৩ মিনিট পর্যন্ত তিনি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই নেমে আসেন। ঝাঁপ দেওয়ার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি ঘন্টায় ৩১৪ কিমি’র সর্বোচ্চ গতি (ভার্টিকাল স্পিড) লাভ করেন। ভমোট ৩৭,২৯০ ফুট উচ্চতা অতিক্রমের পর অবশেষে ৪,৪৯৮ ফুট উচ্চতা থেকে তিনি প্যারাসুট ব্যবহার করে নিরাপদে অবতরণ করেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত এটিই বিশ্ব রেকর্ড। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য আশিকের ডাইভ সংক্রান্ত সকল তথ্য ইতিমধ্যে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ সম্পর্কে ইউসিবি পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ কাদরী বলেন, “নিজেদের সক্ষমতাকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে আরও বেশি সফল এবং দক্ষ হিসেবে গড়ে ওঠার সংস্কৃতিই ইউসিবি’কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই যাদের ভেতর বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার ও দৃষ্টান্ত গড়ার সত্যিকার স্পৃহা রয়েছে, আমরা সবসময়ই তাদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেওয়ার জন্য আশিকের প্রতি অনেক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা রইলো”।
নিজের অর্জনকে দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি উৎসর্গ করে আশিক চৌধুরী বলেন, “জাতি হিসেবে আমরা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অসংখ্য উদাহরণ তৈরি করেছি। বিশ্বরেকর্ডের গৌরব আমি এই দেশ ও দেশের মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাই, যারা আমাকে স্কাইডাইভে অনুপ্রাণিত করেছেন। হাজারও ফিটের উচ্চতায় দেশের পতাকা জড়িয়ে ধরার যে গর্ব, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এই প্রচেষ্টায় পাশে থাকার জন্য ইউসিবি’র প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই”।
ভবিষ্যতে দেশের তরুণদের এমন আরও অকুতোভয় প্রচেষ্টা ও অনন্য মাইলফলক অর্জনের যাত্রায় শতভাগ সহযোগিতার আশ্বাস ব্যক্ত করে আয়োজন সমাপ্ত করা হয়।
খবর সংবাদ বিজ্ঞিপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org