দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সব্জির গায়ে থাকা ধুলো-ময়লা, কীটনাশক পরিষ্কার না হলে, তার থেকে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে। এই বিষয়ে রয়েছে কিছু টিপস্।
বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসা সব্জি, ফলমূল ভালো করে না ধুয়ে খেলে পেটের গোলমাল হতে পারে। চিকিৎসকরা সব সময় বলেন যে, ইতিপূর্বে সব্জি কিংবা ফল ধুয়ে নিয়ে তারপর খাবেন। কারণ হলো ক্ষেত থেকে যে সব্জি তুলে বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তাতে কীটনাশক লেগে থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বর্তমানে সব্জির ফলন বাড়াতে বিভিন্ন রকম কীটনাশকের ব্যবহার হয়ে থাকে। জৈব সারের বদলে নানা রাসায়নিক দেওয়া কীটনাশকের ব্যবহারও ইদানিং বেড়েছে। সেইসব রাসায়নিক ফল কিংবা সব্জির মাধ্যমেই আমাদের শরীরে ঢুকে পড়েই বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের কারণ হয়ে উঠছে।
সব্জি কীভাবে ধুলে কীটনাশকমুক্ত হবে?
# সব্জি কিংবা ফল ধুয়ে নেওয়ার পূর্বে ভালো করে নিজের হাত ধুয়ে নেবেন। উষ্ণ গরম পানিতে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার পরে তবেই সব্জিতে হাত দেবেন। এতে হাতে লেগে থাকা ধুলো ময়লা কিংবা জীবাণু সব্জিতে যাবে না।
# কাঁচা সব্জির গায়ে শুধু কীটনাশকই নয়, ধুলোবালিও লেগে থাকতে পারে। তাই সবচেয়ে পূর্বে সব্জি ভালো করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হবে। সব্জি কেটে পূর্বে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ভালো করে ধুয়ে নিন। ফ্রিজে তোলার পূর্বেও সব্জি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
# আগে দেখা যেতো বাজার থেকে কিনে আনা সব্জি, শাকপাতা লবণ পানিতে ধুয়ে নিতে। বিশেষ করে শাকপাতা লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো বেশ কিছুক্ষণ। তার পরে শাক ধুয়ে কেটে রান্না হত। এই পদ্ধতিতেই সব্জি কিংবা শাকপাতায় লেগে থাকা কীটনাশকের প্রায় সবটাই ধুয়ে বেরিয়ে যায়। শাক সব্জিতে পোকা থাকলেও এই উপায়ে ধুলে তা পরিষ্কার হবে।
# তবে দোকান থেকে কিনে আনা রাসায়নিক মিশ্রিত কোনও দ্রবণে কখনও সব্জি ধোবেন না। বরং বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন বেকিং সোডা এবং পানির দ্রবণ। এই দ্রবণে সব্জি ভিজিয়ে রাখুন অন্তত ১৫ মিনিট। এরপর সেটি তুলে নিয়ে পরিষ্কার কলের পানিতে ধুয়ে নিন। এতে করে ৯০ শতাংশ কীটনাশক ধুয়ে বেরিয়ে যাবে।
# সম পরিমাণে পানি এবং ভিনেগার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করুন। এই দ্রবণে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিন। এবার কাঁচা সব্জি, শাকপাতা, ফল এই দ্রবণে ডুবিয়ে রাখুন ১০ হতে ১৫ মিনিট। এরপর দ্রবণ থেকে তুলে পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কাঁচা স্যালাড খেলে এই উপায়ে সব্জি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org