দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হরহামেশাই অফিসে দেরিতে আসা বা আগেই বের হয়ে যেতে দেখা যায় সরকারি অফিসের অনেক কর্মচারী-কর্মকর্তাদের। সে কারণে এবার সরকারি অফিসের জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট দেরিতে অফিসে ঢুকলে কর্মীদের অর্ধেক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। -খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
কেন্দ্রীয় সরকার সরকারি কর্মীদের সময়মতো অফিসে উপস্থিতির জন্য একটি পরিপত্র জারি করেছে। এতে বলা হয়, সকাল ৯টার দিকে অফিসে ঢুকতে হবে কর্মীদের। এই ক্ষেত্রে ১৫ মিনিট ছাড় পাবেন তারা। অর্থাৎ সোয়া ৯টার মধ্যে অবশ্যই অফিসে প্রবেশ করতে হবে। তবে সোয়া ৯টার পরে যদি এক মিনিটও দেরি হয়, তাহলে সরকারি কর্মীদের অর্ধেক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে। অথবা বরাদ্দ ‘ক্যাজুয়াল লিভ’র মধ্যে থেকে অর্ধদিবস ছুটি কাটা হবে ওই কর্মীর। দুই দিন লেট হলেই এক দিনের ছুটি কাটা যাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি অফিসে কর্মীদের নিয়মানুবর্তিতার জন্য নতুন এই নিয়ম করেছে দেশটির সরকার। সরকারি অফিসের সব কর্মীদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য। তাছাড়াও অফিসে ইচ্ছামতো আসা এবং বেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। তবে করোনাকালে এই ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর ছিল না। করোনা শেষে নতুন স্বাভাবিক জীবনের শুরুতে অনেক কর্মী সেই নিয়মগুলো মানছিলেন না।
সরকার জানিয়েছে, এই অনিয়ম ঠেকাতেই নতুন করে নিয়ম করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নতুন পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, কোন দফতরে কোনো কর্মচারী কখন আসছেন, কখন যাচ্ছেন- সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তা নজরে রাখতে হবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, কোনো কারণে যদি কর্মীরা নির্দিষ্ট দিনে অফিসে উপস্থিত হতে না পারেন, তবে আগে থেকেই জানাতে হবে ও নৈমিত্তিক ছুটির জন্য আবেদনও করতে হবে।
উল্লেখ্য, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসগুলো সকাল ৯টা হতে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে। তবে জুনিয়র স্তরের কর্মচারীদের দেরিতে আসা ও তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া যেনো নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে। এইসব অনিয়ম ঠেকাতেই নতুন এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org