দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকের অভ্যাস রয়েছে সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুধ চায়ে চুমুক দেওয়া। তাদের দুধ চায়ে চুমুক না দিলে দিনটাই যেনো শুরু হয় না। অফিসের কাজের ফাঁকেই হোক কিংবা সন্ধ্যার আড্ডায় হোক, মুচমুচে ভাজাভুজির সঙ্গে দুধ চা তাদের খেতেই হবে, তবে এই অভ্যাস কী স্বাস্থ্যকর?
বেশির ভাগ মানুষেরই কিন্তু প্রথম পছন্দ ‘বেড টি’। মানে, চোখ খুলেই চায়ে চুমুক দেওয়া। নইলে নাকি ঘুম কাটে না। অনেকেই কালো চায়ের থেকেও দুধ চায়ের প্রতিই বেশি ভক্ত।
কড়া লিকার, স্বাদমতো মিস্টি ও বেশ খানিকটা দুধ— তবে না চনমনে হবে শরীর ও মন! তবে আপনি কী জানেন? দুধ চা খেতে যতোটা মধুর, তার উপকারিতা সকলের জন্য কিন্তু সমান নয়। পুষ্টিবিদদের মতে, সকালে ঘুম হতে উঠেই খালি পেটে দুধ চা খেলে তা সহ্য নাও হতে পারে অনেকেরই। এছাড়াও খালি পেটে চা খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত বিষয় নয়। আসলে চা কখন খাওয়া হচ্ছে এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে, সেই বিষয়টিই মূলত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা সকলেই জানি দুধ চা খাওয়া ভাল নয়। তারপরও মন মানতে চায় না। সকালে উঠেই দুধ চা খাওয়া ভালো না খারাপ, সেই বিষয়টি নিয়ে চর্চাও কম হয় না। পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, নিয়মিত খালি পেটে দুধ-চা খাওয়ার অভ্যাস আমাদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রভাবও ফেলে। যেমন- প্রথমত: প্রতিদিন খালি পেটে দুধ চায়ে চুমুক দিলে শরীরে পানিশূন্যতার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দিনে কাপের পর কাপ দুধ চা খেলে গ্যাসের সমস্যাও বাড়বে। দুধে থাকে ভিটামিন বি ১২ এবং ভিটামিন সি। তাই দুধ যদি শুধু খান, তাহলে এই দুই ভিটামিন শরীরের জন্য খুবই ভালো। তবে যদি চা দিয়ে বার বার ফোটানো হয়, তাহলে এই দুই ভিটামিনেরই কিন্তু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
তাছাড়া খালি পেটে কড়া করে দুধ চা খাওয়ার অভ্যাস পেপটিক আলসারের ঝুঁকিও অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। দুধ চা মানেই তাতে একগাদা চিনি দিয়ে স্বাদ বাড়িয়ে নেওয়া। তাছাড়া চিনি ছাড়া দুধ চা খেতে ভালোও লাগে না। সমস্যাটা হলো, এই চিনি শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ হলো, আপনার দুধ চা যদি খেতেই হয়, তাহলে সকালে নাস্তা খাওয়ার পর কম চিনি দিয়ে খেতে পারেন। দিনে ওই একবারই ভালো। এরপর চা খেলে লাল চা খেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org