দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার গুপ্তহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
ইরানের রাজধানী তেহরানে তার আবাসস্থলে হামলায় গতকাল (বুধবার) ভোরে হানিয়ার সঙ্গে তার এক দেহরক্ষীও নিহত হন।
এই ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি এবার ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এবং ইসরায়েলে গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
ইরানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন এবং ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম দুটি এই প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার জবাব হিসেবে ইসরায়েলের ওপর সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। তিন ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো এই তথ্য সামনে নিয়ে এসেছে।
ওই তিন কর্মকর্তার মধ্যে দু’জন রেভোলিউশনারি গার্ড সদস্য। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে যে, হামাস প্রধান হানিয়া নিহত হয়েছেন বলে ইরান ঘোষণা দেওয়ার পরপরই খামেনি বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি এক বৈঠকে এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রেভল্যুশনারি গার্ডের ২ সদস্যসহ ৩ জন ইরানি কর্মকর্তা।
তবে তারা তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি, কারণ হলো এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার জন্য তারা অনুমোদিত কেও নন।
ইরান এবং হামাস এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকেই অভিযুক্ত করেছে। একটানা প্রায় ১০ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইহুদিবাদী এই দেশটি অবশ্য ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তেহরানে যাওয়া হানিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। যদিও ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডারসহ বিদেশে গুপ্তহত্যা করার দীর্ঘ ইতিহাসও রয়েছে ইসরায়েলের।
গাজায় প্রায় ১০ মাসের চলমান এই ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময়টিতে ইরান অনেকটা ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়িয়ে এই অঞ্চলে তেহরানের মিত্র ও প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে তীব্রভাবে আক্রমণ বাড়ানোর মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপও সৃষ্টি করেছে ইরান। তথ্যসূত্র: ভোরের কাগজ অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org