দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্যথা থেকে উদ্বেগ সবই নাকি কমিয়ে দেবে এসেনশিয়াল অয়েল। কোন তেল কীভাবে ব্যবহার করবেন? ব্যথা কমবে এসেনশিয়াল অয়েলেই!
সাধারণ কাজের চাপ, উদ্বেগ, ঘুমের অভাব, ক্লান্তি, গায়ে-গতরে ব্যথা দৈনন্দিন জীবনের যেনো অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ মন এবং শরীরে প্রভাব ফেলছে। এ থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারে এই এসেনশিয়াল অয়েল। গাছগাছড়ার পাতা, শিকড়ের নির্যাস, ফুল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই তেল। ব্যথা কমানো থেকে মন ভালো করা, ক্লান্তি-অবসাদও দূর করতে পারে এই তেল।
ল্যাভেন্ডার অয়েল
বিশেষ এই তেলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। হাড়ে ব্যথা, অস্থিসন্ধির ব্যথা, মাথাব্যথায় জাদুর মতো কাজ করে এই ল্যাভেন্ডার অয়েল। ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ কমাতেও কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েলই যথেষ্ট। অয়েল ডিফিউজ়ারে কয়েক ফোঁটা তেল দিলে তা বাষ্পীভূত হয়ে ঘরে ছড়িয়ে পড়বে। তেলের ঘ্রাণ নাক দিয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছালেই কাজ হবে। ব্যথার জায়গাতেও সামান্য একটু তেল লাগিয়ে দিলেও কাজ হবে। রুমালে লাগিয়েও ঘ্রাণ নিতে পারেন তেলের।
পেপারমিন্ট অয়েল
পেপারমিন্ট অয়েল পেশির চোট কিংবা ব্যথায় আরাম দিতে পারে। সেইসঙ্গে কর্মক্ষমতাও বাড়াতে সহায়তা করে। উল্টোপাল্টা খাবার কথা মাথায় এলে যদি একটু পেপারমিন্ট অয়েল শুঁকে নেন, তাহলে সেই খিদের ইচ্ছেটাও চলে যাবে। ব্যথা কমাতে এক ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েলের সঙ্গে চার ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, এক ফোঁটা জিঞ্জার অয়েল এবং দশ ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়েও তেল তৈরি করে নিতে পারেন। ব্যথার জায়গায় তেলটি লাগালে উপশম হবে খুব দ্রুত সময়ে। সেইসঙ্গে ক্লান্তিও দূর করবে পেপারমিন্ট অয়েলের গন্ধ।
ক্যামোমাইল অয়েল
ক্যামোমাইল গাছের নির্যাস দিয়ে তৈরি হয়েছে এই তেলটি। আর্থ্রাইটিস, পেশির ব্যথা , ঋতুস্রাবের সময় পেশিতে টান ধরা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হতে পারে এই তেলের মাধ্যমে। তিন ফোঁটা ক্যামোমাইল অয়েল, এক ফোঁট পেপারমিন্ট অয়েল, পাঁচ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, দশ ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে তেল তৈরি করে নিতে পারেন। এই তেলের ঘ্রাণ নিলে উদ্বেগ আরও কমবে। আবার গাঁটের ব্যথা, পেশি টেনে ধরার সমস্যা সমাধানেও এই তেল কাজ করবে খুব ভালো। ঘুম না হলেও, সেই সমস্যাও মেটাতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org