দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মূলত গ্লিসারিন স্বচ্ছ, বর্ণ ও গন্ধহীন এক ধরনের তরল। গায়ে মাখার অন্যান্য প্রসাধনীর মতো সুগন্ধ নেই বলে তা সকলের মনোগ্রাহীও নয় খুব একটা।
সামনেই আসছে শীত। আর তখন রুক্ষ হাওয়া বইতে শুরু করলে বাঙালি গেরস্ত বাড়িতে উঁকি মারে এই গ্লিসারিন। তখন সেটি সাবানই হোক কিংবা তরলই হোক। শুষ্ক নিষ্প্রাণ ত্বকের সঙ্গী হলো এই গ্লিসারিন। তবে গায়ে মাখার সাধারণ তেল, লোশন, ক্রিম কিংবা ময়েশ্চারাইজ়ারের চেয়ে গ্লিসারিন বেশ খানিকটা ঘন ও চটচটে ধরনের হয়ে থাকে। মূলত গ্লিসারিন স্বচ্ছ, বর্ণ ও গন্ধহীন এক ধরনের তরল। গায়ে মাখার অন্যান্য প্রসাধনীর মতো সুগন্ধ নেই বলে এটি সকলের মনোগ্রাহীও নয়। তবে ভারতের অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন বলেছেন, গ্লিসারিনের তেমন কদর না থাকলেও ত্বকের যত্নে এই উপাদানটির কোনো বিকল্প আর একটিও নেই।
সম্প্রতি দেশটির সংবাদ মাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ত্বকে ময়েশ্চার কিংবা আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এই গ্লিসারিন। এছাড়াও এটি অ্যান্টিসেপটিকও। ত্বকে প্রদাহজনিত কোনও রকম অস্বস্তি হলেই গ্লিসারিন মাখা যায়। ত্বকের ‘ইলাস্টিসিটি’ কিংবা টান টান ভাব বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই উপাদানটি। ত্বকের যত্নে এটিকে নানাভাবে ব্যবহারও করা যেতে পারে।
গ্লিসারিনের মধ্যে এমন কী রয়েছে?
এই বিষয়ে ত্বকের চিকিৎসকরা বলেছেন, সাধারণত শুষ্ক, খসখসে ত্বক মসৃণ কিংবা পেলব করতে গ্লিসারিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে এই উপাদানটির আরও অনেক গুণ রয়েছে। নিয়মিত মাখতে পারলে সহজেই ত্বকে বলিরেখা পড়ে না। ঘন, চটচটে হলেও ত্বকের রন্ধ্র কিংবা ছিদ্রের মুখও রুদ্ধ করে না। তাই বলা যায় অনেকের কাছেই সাধারণ ক্রিম কিংবা লোশনের তুলনায় গ্লিসারিন অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। যাদের দীর্ঘক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে হয়, তারা ত্বক নিয়ে নানা রকম সমস্যায় ভুগে থাকনে। সেই সব সমস্যার সমাধান রয়েছে এই গ্লিসারিনে।
কতোটুকু গ্লিসারিন মুখে মাখবেন?
ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে যেমন ক্রিম কিংবা লোশন মাখেন তারমধ্যে ২-৩ ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে নিলে কাজ হবে। না হলে ২ টেবিল চামচ গোলাপজলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে একটি তরল তৈরি করে রাখা যেতেই পারে। স্পর্শকাতর ত্বকে র্যাশ, জ্বালা ভাব কমাতেও এই মিশ্রণ মাখতে পারেন। ত্বকের অস্বস্তিও কমবে। স্নান করার পর প্রতিদিন এই মিশ্রণটি মাখতে পারলে ত্বকের জেল্লাও ফিরে আসবে। ওপেন পোরসের সমস্যাও আর থাকবে না। তবে গ্লিসারিন সরাসরি ত্বকে মাখা যায় না। সব ধরনের ত্বকের জন্য এটি উপযুক্তও নয়। তাই নেটমাধ্যম কিংবা রিল দেখে সেই ট্রেন্ডে গা না ভাসানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org