দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে শৈশবকালীন স্থূলতা বাড়ছে। আর এর অন্যতম কারণই হলো ছোটদের বাইরের ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতা। তাই সন্তানকে ওবেসিটির হাত হতে বাঁচাতে হলে তাদের ফাস্ট ফুড খাওয়া অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
চিন্তা বাড়াচ্ছে চাইল্ডহুড ওবেসিটি
বর্তমান সময়ে গুরুতর আকার নিয়েছে চাইল্ডহুড ওবেসিটি। ওজন বাড়ার কারণে শিশুদের পিছু নিচ্ছে নানা রকমের মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা। স্থূলতার কারণে কম বয়সে হানা দিতে পারে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল। এমনকি ওবেসিটি হতে ডিপ্রেশনের ফাঁদেও হয়তো পড়তে পারে আপনার সন্তান।
বোঝার উপায়
সাধারণভাবে বাহ্যিক শারীরিক গঠন দেখে বোঝার উপায় নেই, আপনার সন্তান ওবেসিটিতে ভুগছে কি-না। বরং তা বোঝার সঠিক পথই হলো বডি মাস ইনডেক্স। উচ্চতার তুলনায় আপনার সন্তানের ওজন কতো, তাই বলে দেবে সে ওবেসিটির শিকার হয়েছে কি-না।
দায়ী কারণসমূহ
মূলত অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল চাইল্ডহুড ওবেসিটির বড় একটি কারণ। এখনকার বাচ্চাদের বাইরের ভাজাভুজি খাবারের প্রতিই ঝোঁক অনেকটাই বেশি। ঘরের খাবার যেনো তাদের মুখেই রোচে না। যে কারণে প্রতিদিন ফাস্টফুড খেয়ে ওজন বাড়ছে তরতরিয়ে। তাই সন্তানকে ওবেসিটি থেকে বাঁচাতে হলে জাঙ্ক ফুড থেকে সন্তানকে দূরে রাখার উপায় খুঁজে নিতে হবে।
খাদ্যাভ্যাসে বদল আনা
একটি বিষয় হলো বাবা-মায়েদের দেখেই কিন্তু সন্তানরা শেখে। ওরা আপনাদের যা খেতে দেখবে এবং তাই ওরাও খেতে চাইবে। তাই সন্তানের হিতার্থে আপনারা হেলদি খাবার মুখে তুলুন। পাতে রাখুন ভিটামিন, খনিজসহ নানা পুষ্টি সমৃদ্ধ টাটকা সবজি, মাছ, ফল ও ডিম।
ফ্রিজে যে সব খাবার রাখতে হবে
ফ্রিজ থেকে কোল্ড ড্রিঙ্কস, চকোলেট, আইসক্রিম আজই সরিয়ে ফেলতে হবে। এর পরিবর্তে দই, বাদাম, সবজি এবং ফল দিয়ে ভরিয়ে রাখুন আপনার ফ্রিজ। এতে অন্তত ফাস্ট ফুড খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে আপনার সন্তানের।
এক টিপসেই বাজিমাত
মিল প্ল্যানিং এবং রান্না করার সময় সন্তানকেও সঙ্গে নিতে হবে। এমনকি বাজারেও নিয়ে যেতে হবে। সবজি, ফলসহ নানা হেলদি খাবার তাদেরকে বেছে নিতে দিন। তারা নিজেদের পছন্দমতো ফল, সবজি নিলে সেটি দিয়েই পেট ভরাবে।
বোঝাতে পারলেই খেলা ঘুরবে
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার গুরুত্বটা তাদের ভালোভাবে বোঝান। ভিন্ন ভিন্ন খাবারের কী কী উপকারিতা এবং অপকারিতা রয়েছে, তাও তুলে ধরুন। বোঝালে নিশ্চয়ই বুঝবে আপনার সন্তান।
সীমা থাকা জরুরি
শুধুমাত্র হেলদি খাবারই নয়, পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে সন্তানকে বাইরেও খাওয়াতে নিয়ে যান। তবে সেখানেও একটা সীমা থাকতে হবে। কোনও ভাজাভুজি খাওয়ার বায়না করলে তাকে ঘরে কিছু হেলদি মুখরোচক খাবার বানিয়েও দিতে পারেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org