দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার (৫ অক্টোবর ) দিবাগত রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার (৫ অক্টোবর ) দিবাগত রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ওএবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী’র প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে আজ (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় তার প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই জানাজা হয়। দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বাদ জোহর বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কের বায়তুল আতিক জামে মসজিদে।
শনিবার (৫ অক্টোবর ) বি. চৌধুরী প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আগামীকাল সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় নামাজে জানাজা ও বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শনিবার (৫ অক্টোবর ) দিবাগত রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুর কারণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হলো তা অপূরণীয়। রাষ্ট্রপতি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী দেশের খ্যাতিমান এই চিকিৎসক এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের (প্রখ্যাত মুন্সেফবাড়ি) নানাবাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মজিদপুর দয়াহাটায় তাদের নিজের বাড়ি। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন ও ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। সবগুলো পরীক্ষাতেই তিনি মেধা তালিকায় ছিলেন।
এছাড়াও বদরুদ্দোজা চৌধুরী যুক্তরাজ্যের ৩টি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ লন্ডন, এডিনবার্গ এবং গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফ.আর.সি.পি ও বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফ.সি.পি.এস। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ও বহু গ্রন্থের প্রণেতা।
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ–এর সভাপতি। বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব। এছাড়াও জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৭৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া, দুই সরকারের সময়ই মন্ত্রী ছিলেন। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা, শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেন।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে তিনি ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুইবার জাতীয় সংসদের উপনেতা ও একবার বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ২০০১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০২ সালের জুন মাসে বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাষ্ট্রপতির পদ হতে পদত্যাগ করেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org