দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আগের টানা ৫ মাস দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক বাড়ার পর জুলাই মাস হতে ভাটা পড়েছে। দুই মাসের ব্যবধানে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক কমে গেছে ২ লাখ ২০ হাজার! সর্বশেষ আগস্ট মাসেও সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক কমেছে ৫৫ হাজার!
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। বিটিআরসি প্রতি মাসেই দেশের ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর আগস্টের প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিটিআরসির তথ্যমতে জানা যায়, গত জুন মাসে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক ছিল মোট ১২ কেটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার। জুলাই মাসে সেটি কমে দাঁড়ায় ১২ কেটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার। সর্বশেষ জুলাই মাসে গ্রাহক সংখ্যা কমে ১২ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজারে নেমে গেছে।
মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমলেও ফিক্সড ব্যান্ডের ইন্টারনেট অর্থাৎ, আইএসপি এবং পিএসটিএনের গ্রাহক স্থিতিশীল রয়েছে। গত জুন মাসে আইএসপির গ্রাহক ছিল ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার। জুলাই এবং আগস্ট মাসে এই সংখ্যা একই রয়েছে। কোনো হেরফেরই হয়নি।
মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক কমে যাওয়ায় দেশের মোট ইন্টারনেট গ্রাহক কমে গেছে। গত জুন মাসে দেশে মোট ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ১৪ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার। জুলাই মাসে এসে তা কমে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজারে ও সর্বশেষ আগস্টে তা আরও কমে ১৪ কোটি ৫০ হাজারে নেমে এসেছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে বিটিআরসি’র সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্যই করতে রাজি হননি।
তবে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিভিন্ন কারণে গ্রাহক সংখ্যা কমতে কিংবা বাড়তে পারে। ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বৃদ্ধি এর একটি কারণ হতে পারে। অপরদিকে বিভিন্ন কারণও থাকে। ঠিক কী কারণে গ্রাহক কমে গেছে, সংস্থা হয়তো সেটি খতিয়ে দেখবে। তবে এতে খুব বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির কমিউনিকেশন্স বিভাগের একজন কর্মকর্তা ওই সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “জুলাই এবং আগস্ট মাস আমাদের (অপারেটর) জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সরকার দফায় দফায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলো। সেই সময় আমরা অনেক গ্রাহক হারিয়েছি। অনেকেই নিয়মিত প্যাকেজ কেনাও বন্ধ করেছেন সেই সময় থেকে। এখন নানা ধরনের অফার দিয়ে সেইসব গ্রাহকদের আবারও সক্রিয় করার চেষ্টা করছি আমরা। হয়তো আগামী মাস থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিকও হয়ে যেতে পারে।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
Bengali 
English