দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি কী আপনার সন্তানের ইমিউনিটি বাড়াতে চান? তাহলে তার ডায়েটে রাখুন কয়েকটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। কারণ এই খাবারটিকে বলা হয় ভিটামিন সি’র খনি!
হুট করে বদলে যেতে পারে আবহাওয়া। আসতে শুরু করেছে শীতের আমেজ। এমন পরিস্থিতিতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। এইসব জীবাণু ছোটদের শরীরে বেশি আক্রমণ করে। যে কারণে তাদের ঘিরে ধরে জ্বর, সর্দি, কাশির মতো রোগ-বালাই। তাই এই সময় ছোট্ট সোনামনিকে একটু সাবধানে রাখতে হবে। সেইসঙ্গে তার ডায়েটে জুড়ে দিতে হবে অত্যন্ত উপকারী ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার।
এই সব খাবারগুলোকে সন্তানের ডায়েটে জায়গা করে দিন। আশা করছি, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টি সে হাসতে খেলতে সময় কাটিয়ে দেবে।
কমলালেবু
কমলালেবু অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে ভিটামিন সি’র ভাণ্ডার। আরও নির্দিষ্ট করে বললে একটা কমলালেবুতে মোটামুটিভাবে ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। যে কারনে এই খাবার খেলে ইমিউনিটিও বাড়ে।
তবে এখানেই শেষ নয়, ভিটামিন সি’র পাশাপাশি এই ফলে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়ামসহ একাধিক জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ। তাই নিয়মিত সন্তানকে এই ফলটি খাওয়ান।
আমলকী
এক কথায় বলা যায় সেরার সেরা একটি ফল হলো আমলকী। জানলে আপনিও অবাক হবেন, মাত্র একটা আমলকী খেলেই প্রায় ৬০০ এমজি ভিটামিন সি পাওয়া যাবে। শুধু তা-ই নয়, আমলকীতে রয়েছে ভিটামিন এ, আয়রণ, ফসফরাস, ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো জরুরি সব ভিটামিন এবং খনিজ। তাই ছোট্ট সোনাকে নিয়মিত আলমকী খাওয়ালে তার ইমিউনিটিও বাড়ে। দূরে থাকে একাধিক জটিল অসুখসমূহ।
খাওয়ান কিউই
এই বিদেশি ফলেও রয়েছে ভরপুর ভিটামিন সি। একটা মাঝারি আকারের কিউইতে মোটামুটিভাবে ৭০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন থাকে। সেইসঙ্গে এতে রয়েছে আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়ামসহ একাধিক জরুরি খনিজ ও ভিটামিন। তাই সন্তানকে প্রতিদিন এই ফল খাওয়াতে ভুলবেন না কখনও! এতেই ইমিউনিটি বাড়বে। এতে করে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বেশি বিরক্ত করতে পারবে না আপনার সন্তানকে।
ব্রকোলি
শীত এলেই ব্রকোলির দাম কমে। এই সুযোগে এই সবজিকে সন্তানের ডায়েটে জায়গা করে দিতে পারেন। এতেই তার শরীরে ভিটামিন সি’র ঘাটতি অনেকটাই মিটে যাবে। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত থাকা ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজের গুণে জ্বর, সর্দির মতো একাধিক অসুখ ছোট্ট সোনামনিকে ফাঁদে ফেলতে পারবে না। তাই চেষ্টা করুন নিয়মিতভাবে সন্তানকে এই সবজিটি খাওয়ানোর। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org