দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত ঘি খান। যে কারণে তাদের অজান্তেই শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। বিষয়টি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে এই নিবন্ধটিতে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই ঘিয়ের প্রেমে পাগল। প্রতিদিন ভাতের পাতে ঘি ছাড়া তাদের চলেই না। এমনকী অনেকেই রুটিতেও ঘি মাখিয়ে খান। এমনকি তরকারিকে সুস্বাদু করতেও মেশান এই দুগ্ধজাত খাবারটি। সাধারণ জনগণের একাংশের এহেন ঘি প্রীতি দেখে চমকে ওঠেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষায়, নিয়মিত ঘি খাওয়া অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি বিষয়। এই ভুলটি করলে শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল বিগড়েও যেতে পারে। পিছু নিতে পারে একাধিক জটিল সমস্যাও।
তাই সময় নষ্ট না করে নিয়মিত ঘি খেলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, এই বিষয়টি সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন। আশা করছি, এই নিবন্ধটি পড়ার পর আপনার চোখও খুলে যাবে। আপনিও ঘিয়ের থেকে কিছুটা হলেও দূরত্ব সৃষ্টি করার কাজে লেগে পড়বেন।
হার্টের বারোটা বাজবে
আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন, আপনি প্রতিদিন ঘি খেলে হার্টের স্বাস্থ্য বিগড়েও যেতে পারে। কারণ হলো, এতে রয়েছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের ভাণ্ডার। এই ফ্যাট অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই নিয়মিত ঘি খেলে কোলেস্টেরল লেভেল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। সেজন্য পিছু নিতে পারে হার্টের অসুখের মতো জটিল রোগও। তাই চেষ্টা করুন, যেভাবেই হোক প্রতিদিন ঘি খাওয়া এড়িয়ে চলার জন্য। তাতে সুস্থ থাকবেন।
বাড়বে ওজন
বর্তমান সময় বেশির ভাগ মানুষই ওজনকে বশে রাখতে চান। সেই কারণে তারা জিমে গিয়ে ঘাম ঝরান। তবে সত্যি কথা বলতে গেলে, ওজনকে যদি বাগে আনতেই হয়, তাহলে কোনওভাবেই প্রতিদিন ঘি খাওয়া চলবে না। কারণ হলো, এই খাবার ফ্যাট বাড়ানোর কাজে একেবারে ওস্তাদ। যে কারণে উর্ধ্বমুখী হতে পারে ওজন। তাই শরীরের ভার কমিয়ে ফেলতে চাইলে ঝটপট ঘিয়ের থেকে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে নিন। তাতে সমস্যাকে কাবুও করে ফেলতে পারবেন।
পেটের সমস্যাও বিদায় নেবে
আপনি কী নিয়মিতভাবে গ্যাস কিংবা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন? এরপরও নিয়মিত ঘি খান? উত্তর হ্যাঁ হলে অবশ্যই আপনাকে সাবধান হতে হবে। কারণ হলো, ঘি হজম করা বেশ কঠিন একটি কাজ। এই খাবার খেলে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। বিশেষ করে যাদের আইবিএস ও আইবিডি-এর মতো সমস্যা রয়েছে, তাদের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও সবথেকে বেশি।
লিভারের বিপদ বাড়বে
আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গই হলো এই লিভার। তবে আপনি যদি প্রতিদিন ঘি খান, তাহলে এই অঙ্গের বারোটা বেজে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কারণ হলো, ঘিয়ে উপস্থিত থাকে ফ্যাট। এই ফ্যাট শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। লিভারের প্রদাহ বাড়াতে পারে এই ফ্যাট। এমনকী এই ফ্যাটের কারসাজিতে পিছু নিতে পারে ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যাও। তাই ভুলেও প্রতিদিন ঘি খাবেন না।
ঘি বিষ নয়
যে কোনও সুস্থ মানুষ সপ্তাহে ১-২ বার অল্প পরিমাণে ঘি খেতেই পারেন। তবে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এরপরই না হয় ঘি খাবেন। অন্যথায় শরীরের হাল বিগড়েও যেতে পারে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org