দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভিকুনা উলের রমরমা বৃদ্ধি পায় মূলত ইনকা সাম্রাজ্যের সময়। এই পশমে তৈরি পোশাক এতোই আরামদায়ক ও মূল্যবান বলে বিবেচিত হয়েছিল যে, সম্রাট ও তার নিকটাত্মীয়দের বাইরে কারও এই পশম ব্যবহারের অনুমতিই ছিল না!
কারণ হলো এই এক মিটার কাপড়ের দাম ৬ লক্ষ টাকা! অর্থাৎ, সেই কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক কিনতে যে খরচ পড়বে, সেই টাকায় অনায়াসে একটি ভালো গাড়ি কিনে ফেলা যাবে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যিই এই কাপড়ের দাম আসলেও আকাশছোঁয়া। বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ এই কাপড় যে উল দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে, তার নাম হলো ‘ভিকুনা’। আন্দিজ পর্বতমালায় উটজাতীয় প্রাণী ভিকুনার পশম হতে তৈরি হয় এই কাপড়।
তবে কেনো ভিকুনা কাপড়ের এতো দাম? কী এর বিশেষত্ব? শীতের পোশাক তৈরির জন্য বিখ্যাত ভিকুনা পশম খুবই সূক্ষ্ম, পাতলা ও নরম হয়ে থাকে। সূক্ষ্ম পশম আবার আঁশ জাতীয় আস্তরণ দিয়েও থাকে ঢাকা। যা আন্দিজের ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে ভিকুনার শরীরকেও রক্ষা করে। সেই বিশেষত্বের জন্যই পশমের এতো দাম। সেইসঙ্গে, ভিকুনার শরীর হতে পশম ৩ বছরে এক বার মাত্র কাটা যায়। একটি প্রাণী থেকে সর্বসাকুল্যে ১৫০ গ্রাম পশম পাওয়া যেতে পারে। আবার সেই পশমও কাটতে হয় অতি সাবধানে।
মূলত এই ভিকুনা উলের রমরমা বৃদ্ধি পায় ইনকা সাম্রাজ্যের সময়। এই পশমের তৈরি পোশাক এতোই আরামদায়ক ও মূল্যবান বলে বিবেচিত হয়েছিল যে, সম্রাট ও তার নিকটাত্মীয়দের বাইরে কারও এই পশম ব্যবহারের অনুমতিই ছিল না। তবে পরবর্তীকালে শিকারের কারণে ভিকুনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমতেও থাকে। ১৯৬০-এর দশকে এই প্রাণীকে বিরল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিলো।
বহু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ভিকুনা পশমের সরবরাহ খুবই সীমিত। উৎকৃষ্ট মানের এই পশম সংগ্রহও যথেষ্ট কষ্টসাধ্য একটি ব্যাপার। সেই কারণে এই পশমের দাম এতো বেশি। মোটামুটি মানের এক মিটার ভিকুনা কাপড়ের দাম প্রায় ৩ হাজার ডলার। ভালো ভিকুনার দাম মিটার প্রতি ৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত হতে পারে। ভিকুনা পশমের তৈরি পোশাক পরার সাধ্যি সবার নেই। খুব ধনী ব্যক্তি ছাড়া এই পশমের তৈরি পোশাক চট করে কেও কিনতে পারেন না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org