দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাঁচা সবজি খাওয়া এই জন্য বিপদজনক তা হলো, কাঁচা সব্জি যদি ভালো করে না ধুয়ে খাওয়া হয়, তাহলে পেটে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস আক্রমণও করতে পারে। বিষক্রিয়ার জেরে বড় কোনো সমস্যাও হতে পারে।
স্যালাড ছাড়া এমনিতেই কাঁচা সব্জি কেওই খুব একটা খান না। তবে আনাজ কাটতে কাটতে অজান্তেই দু’-এক টুকরো মুখে চলে যায় অনেক সময়। অনেকেরই ধারণা, কাঁচা সব্জি কিংবা আনাজের মধ্যে যে পুষ্টিগুণ থাকে, তা সঠিকভাবে রান্না না করলে নষ্ট হয়েও যায়। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন ভিন্ন কথা। কাঁচা সব্জি যদি ভালো করে না ধুয়ে খাওয়া হয়, তাহলে পেটে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস আক্রমণও করতে পারে। বিষক্রিয়ার জেরে বড় কোনো সমস্যাও হতে পারে।
কোন সব্জি কাঁচা খেলে বিপদ আরও বাড়তে পারে?
লাউ
অনেকেই ওজন ঝরাতে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে লাউয়ের রস খেয়ে থাকেন। এই পানীয়টি বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়। তবে বাজার থেকে টাটকা লাউ কিনে এনে বাড়িতে তা থেকে রস তৈরি করে খাওয়া যায়। তবে লাউয়ের মধ্যে যদি কীটনাশক থেকেই যায়, তাহলেই বিপদ। কাঁচা আনাজের মধ্যে নানা রকম পরজীবী থাকতে পারে। আর সেটি পেটের মধ্যে প্রবেশ করলে পেটে সংক্রমণও হতে পারে। ডায়েরিয়া, বমি, পেটব্যথার মতো বিভিন্ন উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
বাঁধাকপি
অনেক সময় শসা, গাজর, পেঁয়াজের সঙ্গে স্যালাডে বাঁধাকপির টুকরোও থাকে। কাঁচা বাঁধাকপি খেলে পেটে গ্যাসের বাড়বাড়ন্তও হতে পারে। এছাড়াও লাউয়ের মতো এই সব্জিতেও কীটনাশক থাকতেই পারে। কাঁচা বাঁধাকপির মধ্যে নানা রকম পরজীবী থাকতেই পারে। সেটি পেটের মধ্যে প্রবেশ করলে পেটে সংক্রমণ ও ডায়েরিয়া, বমি, পেটব্যথাও হতে পারে। একান্তই যদি খেতে হয়, তাহলে হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
বিন্স
‘ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল’-এ কর্মরত পুষ্টিবিদ প্রীতি নাগর বলেছেন, সাধারণ “বিন্সের মধ্যে লেকটিন্স নামক এক ধরনের প্রোটিন থাকে। তাই এই জিনিসটি কাঁচা খেলে সেটি হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। যে কারণে পাকস্থলীতে নানা রকম সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেদ্ধ করে নিলে এই ধরনের সমস্যা নাও হতে পারে।” তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org