দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি ডায়াবেটিস মানেই হলো সব কিছুতেই নানা রকম বিধিনিষেধ। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার ভয়ে দুধ চা খাওয়া ছেড়েছেন অনেকেই। চায়ে বদল এনে কীভাবে কমাতে পারেন রক্তের শর্করার মাত্রা?
অনেকেই ঘুম থেকে উঠেই ইদানীং চিনি দেওয়া দুধ চা বা লাল চায়ের বদলে গ্রিন টি’র কাপে চুমুক দিচ্ছেন। কেও আবার ওজন ঝরানোর আশায়, কেও নিছকই শখের বশে চা খাওয়ার অভ্যাসে বদল এনেছেন। তবে কেবল গ্রিন টি’ই নয়, বর্তমানে বাজারে ব্লু টি’রও চাহিদা বেড়েছে। অপরাজিতা ফুল ও নীল জবার মিশ্রণ দিয়েই তৈরি হয় এই ব্লু টি। হালকা টক স্বাদ এবং নীল রঙের জন্য অনেকেই এই চায়ের স্বাদ পছন্দ করেন। কেবল স্বাদে ভালো তাই নয়, এই চায়ের স্বাস্থ্যগুণও রয়েছে অনেক। তাহলে কেনো এই চা এতো স্বাস্থ্যকর?
# শীতের এই মৌসুম শরীরে ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ে। ব্লু টি’তে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
# ব্লু টি’তে অ্যান্টিথ্রম্বোটিক গুণ রয়েছে, যে কারণে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই চা। তাই এই চা নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও কমে। সব মিলিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও এই চা অনেক উপকারী।
# বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত এই চা খেলে রক্তের শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
# এই ব্লু টি হজমেও সাহায্য করে। ভারি খাবার খাওয়ার পূর্বে এক কাপ ব্লু টি খেতে পারেন। এতে বিপাকহারও বাড়ে। বমি বমি ভাব কাটানোর কাজেও উপকারে আসে এই ব্লু টি।
# ব্লু টি’র অ্যান্টি-গ্লাইসেটিন গুণের জন্য এটি ত্বকের পক্ষে খুবই ভালো। যারমধ্যে থাকা ফ্লাভোনয়েড ত্বকে কোলাজেন তৈরি করে বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে। আবার বলিরেখা পড়তে দেয় না। অ্যান্থোসায়ানিন থাকায় চুল পড়ার সমস্যাতেও কাজ করে এই ব্লু টি।
# প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে এই চা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তিও উন্নত করে। কারণ হলো, ব্লু টি মস্তিষ্কে অ্যাসিটাইলকোলিনের পরিমাণ বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। যার অ্যান্টিপাইরেটিক গুণ উদ্বেগ কমাতে এবং অবসাদ কাটাতেও সাহায্য করে থাকে।
# ব্লু টি ভালো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উৎস। ডাইইউরেটিক হওয়ার কারণে এই চা খেলে অবশ্য ঘন ঘন মূত্রচাপ আসে। যে কারণে শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বেরিয়ে যায়। যারমধ্যে থাকা সাইক্লোটাইড-এর অ্যান্টি এইচআইভি, অ্যান্টি-টিউমার গুণও রয়েছে।তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org