দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার বিষয় নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ওই হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সব পক্ষকেই নিজেদের মধ্যকার মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এই আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেছেন। সম্প্রতি ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়েই ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলার ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই বিষয় ও বাংলাদেশ নিয়ে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি সম্পর্কে আপনার কী কোনো মন্তব্য আছে?
উক্ত প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, সব পক্ষ তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবেন, সেটিই আমরা দেখতে চাই।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিসহ ব্যাপক বিক্ষোভের আয়োজন করে দেশটির উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এই সময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথিত নিপীড়নের নিন্দা ও ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তি দাবির নামে সেখানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সেখানে হামলা এবং তাণ্ডবের সময় এই ভাঙচুর ও হাইকমিশন অফিসের পতাকা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনাও ঘটে।
এই ঘটনায় শক্ত প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ থেমে থাকেনি। ঘটনার একদিন পর ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভও জানায় ঢাকা।
এদিকে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারতও গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে। এ ছাড়াও হামলার ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ভারত এবং ৩ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও তার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। নতুন করে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি দেখা দিয়েছে।
ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ভারতের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, দু’পক্ষের এমন টানাপোড়নের মধ্যেই গত সোমবার ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সফরকালে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও দেখা করেন। এই সময় ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করতে ‘সম্মিলিত এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা’য় নয়াদিল্লি আগ্রহী বলেও জানান বিক্রম মিশ্রি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org