দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সরকার গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) প্রস্তাবনায় সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ দাম কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকার পাঁচ এমবিপিএস সংযোগ ৪০০ টাকায় পাবেন এর গ্রাহকরা। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন উদ্যোগ নিয়ে আপত্তি তুলেছে ইন্টারনেট সেবাদাতারা।
দেশে বর্তমানে দিনে ৬ হাজার ৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ চাহিদার ৪০ শতাংশই ব্যবহার হয়ে থাকে ব্রডব্যান্ড সেবায়। এক কোটি ৩৭ লাখ গ্রাহকের জন্য ২০২১ সালে ৫ থেকে ২০ এমবিপিএস পর্যন্ত ৩ ক্যাটাগরিতে সর্বনিম্ন ৫০০ হতে ১২০০ টাকা পর্যন্ত দাম নির্ধারণ করে বিটিআরসি। এই রেটে সাড়ে ৩ বছর ধরে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছে আইএসপিগুলো।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর বার বার ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথায় বলে আসছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বিটিআরসি। যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
বিটিআরসি বলছে যে, অনুমোদন পেলে মাসে ৫০০ টাকার ৫ এমবিপিএস সংযোগে খরচ কমবে ১০০ টাকা। ১০ এমবিপিএসে ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা ও ১২০০ টাকার পরিবর্তে ১১০০ টাকায় পাওয়া যাবে ২০ এমবিপিএস।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী বলেছেন, গ্রাহক পর্যায়ে অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমানো সম্ভব। সরকার থেকে অনুমোদন পেলে এই সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিটিআরসির এমন উদ্যোগ ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বড় ধরনের চাপের মুখে ফেলবে বলেও মনে করেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক। তিনি বলেছেন, এমন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেট সেবাদাতারা বড় ধরনের চাপের মুখে পড়বেন। অপরদিকে টাকা কমালে মানসম্মত সেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org