দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা দাঁত মাজার ব্রাশ নিয়ে খুব একটা ভাবিনা। অথচ ক্রমাগত জীবাণুযুক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে মুখে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়াবাড়ি পর্যায়েও পৌঁছাতে পারে। জিঞ্জিভাইটিস, পেরিডন্টিটিসের মতো রোগের প্রকোপও বাড়তে পারে।

অনেকেই দিনে অন্তত দু’বার নিয়ম করে দাঁত মাজেন। মাজার পর কলের পানিতে ভালো করে মুখ ধুয়েও নেন। তোয়ালেয় ব্রাশ মুছে নিয়ে ব্রিসল্সের মুখে ‘ক্যাপ’ পরিয়ে রাখেন অনেকেই। তবে পৃথকভাবে দাঁত মাজার ব্রাশও যে স্যানিটাইজ় করা প্রয়োজন, তেমন কথা হয়তো শোনেননি কখনও।
এই বিষয়ে দন্ত চিকিৎসকরা বলেছেন, মূলত মুখগহ্বরের ভিতর অসংখ্য ব্যাক্টেরিয়া থাকে। ব্রাশ করার সময় সেগুললো ব্রিসল্সে লেগেও যায়। পানি দিয়ে ধুলেও তা সহজেই যেতে চায় না। আবার অনেকেই দাঁত মাজার ব্রাশ সাধারণত শৌচাগারে, বেসিনের পাশেই রেখে দেন। সেই ক্ষেত্রে জীবাণুদের বাসা বাঁধার সুযোগও বেশি। তাই মাঝে-মধ্যেই ব্রাশগুলো স্যানিটাইজ় কিংবা জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজন পড়ে।
ক্রমাগত জীবাণুযুক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে মুখে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। জিঞ্জিভাইটিস, পেরিডন্টিটিসের মতো রোগের প্রকোপও বাড়তে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। দু’বেলা নিয়ম করে ব্রাশ করার পরও যা সহজে যেতেই চায় না।
কীভাবে দাঁতের ব্রাশ স্যানিটাইজ় করবেন?
আমরা জানি হাত স্যানিটাইজ় করার জন্য বাজারে অ্যালকোহল মিশ্রিত হাজার রকমের স্যানিটাইজ়ার বিদ্যমান। দাঁত মাজার ব্রাশ জীবাণুমুক্ত করার জন্যও কী তেমন কোনও জিনিস রয়েছে? নেটপ্রভাবী এক দন্ত চিকিৎসক জয়েস কাং বলেছেন, “ব্রাশ জীবাণুমুক্ত করার অনেক উপায় রয়েছে। যেমন- ফুটন্ত গরম পানিতে কিছুক্ষণ দাঁত মাজার ব্রাশ ডুবিয়ে রাখলেও কাজ হবে। আবার মাউথওয়াশ দিয়েও ব্রাশ ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে।” এ ছাড়াও বর্তমানে বাজারে ইউভি লাইট দেওয়া জীবাণুনাশক যন্ত্র কিনতে পাওয়া যায়। এই যন্ত্রটির তলায় ব্রাশ রাখলে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত জীবাণু ধ্বংস করে ফেলা সম্ভব।
কয়দিন অন্তর টুথব্রাশ বদলে ফেলা উচিত?
সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত মাজার ব্রাশ জীবাণুমুক্ত করতে না পারলে তা বদলে ফেলাই ভালো। সাধারণত ৩ হতে ৪ মাস অন্তর দাঁত মাজার ব্রাশ বদলে ফেলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়াও ব্রাশের ব্রিসল্স নষ্ট হয়ে গেলে, সংক্রামক ব্যাধি থেকে সেরে ওঠার পরে বা ভুলবশত আপনার ব্রাশ অন্য কেও ব্যবহার করে ফেললে তা অবশ্যই বদলে ফেলতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org