দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে যাত্রীদের ধাক্কাধাক্কি ও হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে চার শিশুসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভিড়ে যাত্রীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে দমকলের ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর কিছুক্ষণ পরই হতাহতের খবর প্রকাশ্যে উঠে আসে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ ও ১৪ নম্বর প্লাটফর্মে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল বলেও অভিযোগ যাত্রীদের। কেও কেও দাবি করতে থাকেন, ট্রেন দু’টি বাতিল হয়ে গেছে। যে কারণে ভিড়ের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে রেলের দাবি হলো, এই সবই গুজব ছিল।
এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘পদপিষ্টের ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে প্রশাসন।’
এ ছাড়াও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে শোক প্রকাশ করে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এক্স হ্যান্ডলে রিখেছেন, ‘স্টেশনে পদপিষ্টের কারণে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’ সেইসঙ্গে, নিহতের পরিবারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা এএনআইকে জানিয়েছেন যে, নয়াদিল্লি স্টেশনে কোনো পদপিষ্টের ঘটনাই ঘটেনি। গুজব ছড়ানোর কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রেল মন্ত্রণালয় হতে জানানো হয়, রেল পুলিশ ও দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি দেশটির মন্ত্রণালয়ের। এই ভিড়ের মধ্যে পড়ে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানায় রেল মন্ত্রণালয়।
রেল পুলিশের ডিসি জানিয়েছেন, ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। স্টেশনে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল ওই সময়। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস লেট ছিল। তাই ওই দুই ট্রেনের যাত্রীরাও ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সে কারণেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org