দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গিয়েছিলেন হাঙরের সঙ্গে সেলফি তুলতে- আর এক ঝটকায় প্রৌঢ়ার দুটি হাত কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে গেলো হাঙরটি। গোটা দৃশ্যটির সাক্ষী ছিল তারই পরিবারের সদস্যেরা। মহিলার স্বামী পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাঙরটিকে তাড়ানোর চেষ্টাও করেন।

সমুদ্রসৈকতে ছুটি কাটাতে যান এক কানাডার পর্যটক। ফুরফুরে মেজাজে সমু্দ্রের ধারে একের পর এক ছবি তুলছিলেন ৫৫ বছর বয়সি একজন মহিলা। সেই ছুটিই যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে তা তার কল্পনাতেও আসেনি। অতিরিক্ত সাহসী হয়ে এক হাঙরের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ভুলের মাসুলও দিতে হলো তাকেই। এক ঝটকায় প্রৌঢ়ার দুটি হাত কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে গেলো ওই হাঙরটি। গোটা দৃশ্যটিরই সাক্ষী ছিল তার পরিবারের সদস্যরা। মহিলার স্বামী পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাঙরটিকে তাড়ানোর চেষ্টাও করেন। হাঙরটিকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তা সত্ত্বেও হাঙরটি পিছনে ফিরে এসেই আক্রমণ করার চেষ্টা করে।
৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত টার্কস অ্যান্ড কাইকোস নামে দ্বীপে ঘটেছে ঘটনাটি। ‘দ্য সান’ জানিয়েছে যে, ওই সময় থম্পসনস কোভ বিচের কাছে উপকূল হতে মাত্র কয়েক মিটার দূরে এই ঘটনাটি ঘটে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রৌঢ়ার একটি হাত কব্জি থেকে ও অন্যটি মাঝখান থেকে ছিঁড়ে নিয়ে চলে যায় হাঙরটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, মহিলার সারা শরীর রক্তে ভেসে যায়। বহু পর্যটকই সাহায্যের জন্য দৌড়ে আসেন। ৪০ মিনিট ধরে তিনি ওই তীরেই পড়েছিলেন। অনেকের অনুমান, হাঙরটি প্রায় ৬ ফুট লম্বা ছিল। যদিও এটি কোন প্রজাতির তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। সানের প্রতিবেদনে বলা হয় যে, এটি একটি বুল হাঙরও হতে পারে। এই অঞ্চলে সাধারণত এদেরই দেখা যায়।
পরে পুলিশ ও চিকিৎসা কর্মীদের তৎপরতায় মহিলাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য চেশায়ার হল মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় ও উন্নত চিকিৎসার জন্য কানাডায় ফেরত পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনৈক ব্যক্তি জানিয়েছেন, গুরুতর আঘাত সত্ত্বেও প্রৌঢ়া তীরে ফিরে আসতে পারেন। তার উরুতেও হাঙরের কামড়ের ক্ষত চিহ্ন ছিল।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org