দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি শরীর ও মন ভালো রাখতে আনন্দে থাকার পরামর্শই দেন সবাই। প্রাণ খুলে হাসলেই সুস্থ থাকা যায়। তবে আপনি জানেন কী, কাঁদলেও নাকি মন ভালো থাকে!
শরীর সুস্থ ও মনকে তরতাজা রাখতে প্রতিদিন প্রাণ খুলে হাসুন ও আনন্দে বাঁচুন। বেঁচে থাকার এই মূলমন্ত্রটি সকলেই যুগ যুগ ধরে শুনে আসছেন। আবার বিশেষজ্ঞরা উল্টো কথাও বলেন অনেক সময়। শুধুমাত্র হাসলেই নয়, মন খুলে কাঁদলেও নাকি মন ভালো থাকে! আসলে মনের কষ্ট চেপে না রেখে কেঁদে হালকা হলে মনের চাপও কমে। আবার গবেষণা বলছে যে, ঘড়ি ধরে নিয়ম মতো কাঁদলেও নাকি মেদ ঝরে যায়! তাছাড়াও পাওয়া যায় একাধিক উপকার।
মানসিক চাপ ও অনিদ্রা দূর হয়
অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে মানুষের শরীরে লিওসিন এনকেফেলিন এবং প্রোলাকটিন-এর মতো কিছু রাসায়নিকও জমা হয়। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার চাপও বেড়ে যায়। কেঁদে ফেললে এইসব অতিরিক্ত চাপ কমে যায়। মানসিক চাপের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর চাপ কমলে ঘুমের সমস্যাও মেটে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা যায়, কাঁদার সময় আমাদের শরীরে কিছু হরমোনের ক্ষরণ আরও বেড়ে যায়। যে কারণে ঘুমও আসে দ্রুত।
মন ভালো করা কান্না
এক গবেষণা বলছে, ম্যাঙ্গানিজ শরীরে বেশি মাত্রায় জমতে থাকলে উদ্বেগ, অস্বস্তি, রাগ-ক্ষোভ বেড়ে যাওয়াসহ আবেগজনিত নানা সমস্যাও তৈরি করে। কেঁদে ফেলতে পারলে এর মাত্রাও কমতে থাকে ও মনও তখন হালকা হয়।
চোখের জন্যও ভালো
চোখের পানি এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক। এই পানি চোখের মণি এবং পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে। চোখকে শুষ্ক হওয়ার হাত থেকেও বাঁচায়। এতে দৃষ্টি ভালো হয়। তাছাড়াও চোখের পানিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করার উপাদান থাকে। দূষণের কারণে চোখে জীবাণু বাসা বাঁধতেই পারে। চোখের পানিতে থাকা আইসোজাইম এইসব জীবাণু সহজেই ও দ্রুত দূর করে।
শিশুদের ফুসফুসের ক্ষমতা আরও বাড়ে
মাতৃগর্ভে শিশুর শরীরে আম্বিলিক্যাল কর্ডের মাধ্যমে অক্সিজেন প্রবেশ করে। তবে জন্মের পর নিজেকেই শ্বাস নিতে হবে। তাই শিশুর কাঁদাটা খুবই জরুরি। যে কারণে শিশুর ফুসফুসে পৌঁছায় অক্সিজেন ও ধীরে ধীরে কাজও করা শুরু করে।
কাঁদলে মেদ ঝরবে
চিকিৎসা বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফ্রের দাবি হলো, সন্ধ্যা ৭টা হতে রাত ১০টার মধ্যে কাঁদলে ওজন আরও কমে। কাঁদলে কর্টিসল নামে এক ধরনের হরমোন প্রচুর পরিমাণে নিঃসৃত হয়। এই হরমোনই মেদ কমাতে সাহায্য করে থাকে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org