দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে অনেকেই ইউটিউবের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে সাবলম্বি হচ্ছেন। এটি বর্তমানে অনেকেরই প্রধান পেশা। এর মাধ্যমে শহর কিংবা গ্রামের বিভিন্ন বয়সের কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের বর্তমানে দেখা যায় বিশ্বজুড়ে। তবে ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে এমন এক গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামের প্রায় সকলেই ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর!

বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের তুলসী গ্রামের প্রায় সবাই বর্তমানে ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তারা ভিডিও তৈরি করেন গ্রামের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, নানা সামাজিক সমস্যা নিয়ে। সেগুলোতে হাজার হাজার লাইক, ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার পান। ইউটিউবের আয় তাদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক বদল নিয়ে এসেছে।
এই গ্রামের আয়ের মূল উৎসই হলো ইউটিউব। গ্রামের প্রতিটি মানুষদের হাতে হাতে মোবাইল। শুধু বিনোদনের মধ্যেই এর ব্যবহার আটকে না রেখে এটিকে বরং গ্রামটির বেশির ভাগ মানুষ তাদের আয়ের অন্যতম একটি উৎস করে নিয়েছেন।
জানা গেছে, একসময় তুলসী গ্রামের মানুষদের জীবন ছিল অত্যন্ত দারিদ্র্যপীড়িত। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা মেটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে সেই গ্রামের অধিবাসীরা ইউটিউবের মাধ্যমে নিজের জীবনযাত্রা দেখিয়ে রোজগার করছেন। গ্রামের পরিবেশ ও জীবনযাপনকে নিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলো বর্তমানে শহরের মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গ্রামের প্রকৃত জীবনে একধরনের সাদাসিধে সৌন্দর্য রয়েছে এইসব কনটেন্টে, যা শহরের মানুষদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।
তবে এই পরিবর্তন একদিনে কিন্তু আসেনি। করোনা মহামারির সময় থেকেই গ্রামবাসী ইউটিউবের দিকে আগ্রহী হতে শুরু করেন। বাড়িতে বসে ইউটিউব ভিডিও দেখতে দেখতে তারা নিজেরাও ভিডিও তৈরির কথা ভাবতে থাকেন। সেই চিন্তা থেকেই ইউটিউব তাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে। এখন গ্রামের প্রায় সবাই সামাজিক এই মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে আয় করছেন বহু অর্থ।
এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই বর্তমানে রয়েছে মোবাইল এবং ট্রাইপড। কেও কেও আবার ভিডিও তৈরির আরও উন্নত সরঞ্জাম কিনেছেন ভিডিও করার জন্যই। গ্রামবাসীর এই স্বতঃস্ফূর্ত ভিডিও তৈরির কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও তুলসী গ্রামকে ‘ভারতের ইউটিউব ক্যাপিটাল’ হিসেবেই উল্লেখ করেছে।
তুলসী গ্রামের ইউটিউব কনটেন্টের আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, তাদের নিজেদের প্রকৃত জীবন ও গ্রামীণ পরিবেশ। কোনো রকম মেকআপ কিংবা সাজগোজ ছাড়াই নিজেদের জীবন ফুটিয়ে তুলছেন তুলসী গ্রামের মানুষরা।
তুলসী গ্রাম বর্তমানে শুধু একটি গ্রামই নয়, বরং ইউটিউবের দুনিয়ায় এক নতুন দৃষ্টান্তও হয়ে উঠেছে। করোনা-পরবর্তী সময় ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের জীবনে নিয়ে এসেছে নতুন এক অধ্যায়। এটি তাদের জন্য সাফল্য ও অর্থ উপার্জনের সুযোগও তৈরি করেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org