দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাথা যন্ত্রণা নানা কারণেই হতে পারে। ওষুধ খেয়ে তাকে সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও যখন-তখন সেটি আবার ফিরে আসতে পারে। মাথা যন্ত্রণা মানেই যে প্রাণঘাতী- এমনটি কিন্তু নয়।
দীর্ঘক্ষণ অফিসে কাজ করেছেন। এরপর প্রিয় মানুষটির সঙ্গে ‘নাইট শো’ দেখতে গেছেন। তবে তার যাওয়াই সার। এমন মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়েছে যে, কিছুই দেখতে ইচ্ছে করছে না তার। কোনও আওয়াজই ভালো লাগছে না। সিনেমা হলে বসে পপকর্ন ইত্যাদি খেয়ে উল্টো যন্ত্রণা আরও বেড়েই চলেছে। কাজের চাপ বেড়েছে, এই ভেবেই মাথা যন্ত্রণাকে খুব একটা গুরুত্বই দিচ্ছেন না। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, এই ধরনের সমস্যা যদি ঘন ঘন হতে থাকে, তাহলে কোনও মতেই অবহেলা করা যাবে না।
মাথা যন্ত্রণা নানা কারণেই হতে পারে। ওষুধ খেয়ে তাকে সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও যখন-তখন তা ফিরেও আসতে পারে। মাথা যন্ত্রণা মানেই যে প্রাণঘাতী, এমনটি কিন্তু নয়। তবে কী কারণে নিত্য দিন এমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে তা জেনে নেওয়া দরকার।
মাথা যন্ত্রণা কী কী কারণে হতে পারে?
মাইগ্রেন
যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তারা জানেন, এই ধরনের ব্যথা যে কোনও সময়ই হতে পারে। তাই সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। মাইগ্রেনের ব্যথা একবার শুরু হলে ১-২ দিন পর্যন্ত থাকে। সেইসঙ্গে বমি বমি ভাবও থাকে- মাঝে মধ্যে ব্যথা বেশি হলে বমিও হয়। মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা কীভাবে সামলাবেন, তা অনেকেই হয়তো জানেন। তবে হঠাৎ এমন যন্ত্রণা শুরু হলে বেশি করে পানি পান করতে হবে। সেইসঙ্গে কোনও কথা না বলে চুপ করে বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে।
উদ্বেগের কারণে যন্ত্রণা হতে পারে
মানসিক অস্থিরতা বা কোনও কারণে মনের মধ্যে থাকা চাপা উদ্বেগ থেকেও অনেক সময় মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। উদ্বেগের কারণে ব্যথা হলে সেটি মাথা থেকে ঘাড়েও ছড়িয়ে পড়ে। আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা এই ব্যথা থাকে। উদ্বেগ থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা দরকার। যোগাসন, ধ্যানও করতে পারেন ইচ্ছে করলে। তৎক্ষণাৎ স্বস্তি পেতে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন- তাতেও উপকার পাবেন।
উচ্চ রক্তচাপ
রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখার ওষুধ খাওয়ার পরেও অনেক সময় এটি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। বিশেষ করে যাদের ঘন ঘন রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। মাথা যন্ত্রণা, মাথাভার বা মাথায় অতিরিক্ত চাপ অনুভূত হলে অবশ্যই রক্তচাপ মেপে নিতে হবে।
সাইনাস
ঠাণ্ডা লেগে সর্দিকাশি থেকেও মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। অনেক সময় সর্দি জমেও নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়। করোটি, নাক, চোখ, গাল ও কপালের মধ্যে বেশ কিছু বায়ুপূর্ণ অংশ থাকে। ঘন ঘন আবহাওয়া পরিবর্তনে, ঠাণ্ডা লেগে কিংবা প্রদাহের কারণে এই অংশগুলো ফুলে ওঠে। আর তখন অসহ্য যন্ত্রণা হয়।
চোখের সমস্যা
অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ টিভি, কম্পিউটার, ফোনের পর্দায় চোখ রাখলেও অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ‘আই ফেটিগ’ দিয়েও সমস্যা শুরু হয়। কারও কারও চোখ থেকে পানিও পড়ে। চোখের পিছন দিক থেকে যন্ত্রণা শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সেটি মাথা পর্যন্ত পৌঁছেও যেতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org