দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা বলেছেন, সাধারণত মানবদেহে যে আকারের মূত্রথলি রয়েছে, তার ধারণক্ষমতা খুবই কম থাকে। দীর্ঘক্ষণ যদি কেও প্রস্রাব ত্যাগ না করে তা চেপে রাখে, সেই ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের পেশি ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ে।
অনেক সময় দেখা যায় বাড়ির বাইরে প্রস্রাব ত্যাগ করতে পারবেন না বলে কোথায় বের হলে পানি কম খান। অনেকেই আবার দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখেন। এই অভ্যাসের কারণে মূত্রনালিতে উপস্থিত ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। সেই কারণেই মূত্রথলি কিংবা মূত্রনালিতে সংক্রমণজনিত সমস্যাও বাড়তে থাকে।
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, সাধারণত মানবদেহে যে আকারের মূত্রথলি রয়েছে, তার ধারণক্ষমতাও খুবই কম। প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার পর্যন্ত মূত্র ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে মূত্রথলির। তবে কেও যদি দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ত্যাগ না করে তা চেপে রাখেন, সেই ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের পেশি ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ে। সেখান থেকে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তা আজ জেনে নিন।
মূত্রনালি ও থলির সংক্রমণ
দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখলে মূত্রনালি ও মূত্রথলিতে সংক্রমণ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। রাস্তাঘাটে সাধারণ শৌচালয় ব্যবহার করা নিয়ে বহু মহিলার আপত্তি রয়েছে। তাই তারা প্রস্রাব চেপে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যে কারণে মূত্রথলির মধ্যে ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ে। মূত্রথলি, মূত্রনালি হয়ে সংক্রমণ কিডনি পর্যন্ত ছড়াতে খুব বেশি সময় নেয় না।
মূত্রথলির পেশি শিথিল হয়ে পড়ে
মানুষের মূত্রাশয় অনেকটা বেলুনের মতোই। সেখানে মূত্র জমতে শুরু করলে তা আকারে বড় হয়ে তখন ফুলতে শুরু করে। মূত্রত্যাগ করলে সেটি আবারও সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ক্রমাগত প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রাশয় এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, সেটি আর স্বাভাবিক আকারে ফিরতেই পারে না। সহজভাবে বললে পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণ ক্ষমতা তখন নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে প্রস্রাব ধরে রাখতেও সমস্যা হয়। হাঁচি, কাশি কিংবা ঝাঁকুনির কারণে মূত্রাশয়ে চাপ পড়লেই প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে।
কিডনিতে জমতে পারে পাথর
দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখলে কিডনিতে পাথরও জমতে পারে। দীর্ঘক্ষণ মূত্রত্যাগ না করলে মূত্রের মাধ্যমে শরীর হতে বর্জ্য পদার্থগুলো বেরিয়েও যেতে পারে না, আর তখন সেগুলো দেহের ভিতরে জমতে শুরু করে। কিডনির ভিতর বর্জ্য পদার্থ জমে কঠিন হয়ে যায়। কিডনিতে পাথর তৈরি হলে সেটি থেকে ব্যথা, সংক্রমণ বা রক্তপাতের মতো গুরুতর সমস্যাও শুরু হয়। পাথরগুলো খুব বড় হয়ে গেলে অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করা ছাড়া তখন উপায় থাকে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org