দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাগ বা ক্ষোভ সামলাতে না পেরে এক ৪৮ বছরের মহিলা প্রায় ১৫৫ কেজি ওজনের চেহারা নিয়ে ছেলের পেটের উপর বসেছিলেন। সেই চাপেই মারা গেলো ১০ বছর বয়সী শিশুটি।
ছেলেকে শাস্তি দিতে গিয়ে ১০ বছরের ছেলের প্রাণই কেড়ে নিলেন ক্ষোভে দিশেহারা এক মা। প্রায় ১৫৫ কেজি ওজনের চেহারা নিয়ে ছেলের পেটের উপর বসেছিলেন ৪৮ বছর বয়সী ওই মহিলা। ওই চাপেই মারা যায় শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের এপ্রিলে ইন্ডিয়ানায়। অভিযুক্তের নাম জেনিফার লি উইলসন। নিজের ভারি শরীর নিয়ে ছেলের উপর কয়েক মিনিট বসেছিলেন বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ছেলেটি বাড়ি থেকে বেশ কিছুক্ষণের জন্য উধাও হয়ে যায। পরে তাকে প্রতিবেশীর বাড়িতে খুঁজে পান তারই মা। সেই অপরাধের শাস্তি হিসাবে এই কাণ্ডটি ঘটান তিনি।
সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ এপ্রিল, ভালপারাইসোর একটি বাড়ি হতে পুলিশের কাছে ফোন আসে। তাদের জানানো হয় যে, ডাকোটা লেভি স্টিভেন্স নামে একটি শিশু শ্বাস নিচ্ছে না এবং তার নাড়ির গতি পাওয়া যাচ্ছে না।
পুলিশ অফিসার যখন সেখানে উপস্থিত হন তখন তিনি শিশুটির ঘাড়ের নীচের অংশ ও বুকে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। তারা ছেলেটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ও তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই সে মারা গেছে। হাসপাতাল জানিয়েছে যে, শিশুটির অঙ্গের নরম টিস্যুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, লিভার এবং ফুসফুসে রক্তক্ষরণ হয়েছে ও আঘাতের কারণে সে মারা গেছে।
মামলা দায়ের করার পর আদালতে জেনিফার বলেছেন, ঘটনার দিন তার ছেলে বার বার বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তিনি তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। দু’জনেই মাটিতে পড়ে যান। ছেলেকে ধরে রাখতে তার পেটের মাঝখানে প্রায় ৫ মিনিট বসে ছিলেন জেনিফার। অবশেষে ডাকোটা নড়াচড়া বন্ধ করার পরই তিনি উঠে বসেন। তবে জেনিফার ভেবেছিলেন ডাকোটা নিঃস্পন্দ হওয়ার ভান করছেন। তাকে উল্টে দিতেই তার মা লক্ষ্য করেন ছেলের চোখের পাতা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। উইলসন এরপর সিপিআর শুরু করেন ও পুলিশেও খবর দেন। জানুয়ারিতে জেনিফারের বিরুদ্ধে ৬ বছরের কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছে সেখানকার আদালত। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org