দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানের বন্দর আব্বাসের শহিদ রাজি বন্দরে গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। এতে এ পর্যন্ত নিহত বেড়ে ৪০ এ দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে আহতের সংখ্যা এক হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে।
এই হামলার জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করেছে দেশটির একজন সংসদ সদস্য। তেহরানের এমপি মোহাম্মদ সেরাজ বলেছেন যে, এই প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পরিকল্পনায় ছিলো ইসরায়েল।
তিনি দাবি করে বলেছেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই কনটেইনারে বিস্ফোরণ রাখা হয়েছিল ও দূর থেকে সম্ভবত স্যাটেলাইট কিংবা টাইমারের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এই বিস্ফোরণ কোনো দুর্ঘটনা নয় বলেও দাবি করেছেন ইরানের এই সংসদ সদস্য।
অপরদিকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ছোট একটি আগুন থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে ঠিক কোথায় থেকে আগুনের এই সূত্রপাত হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয় বলেই জানান তিনি।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্কান্দর মোমেনি বলেছেন, শনিবার দুপুর ১২টা ৪ মিনিটের সময় ছোট একটি আগুন দেখা যায়, তবে এই আগুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে ধোঁয়া ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং আশেপাশের কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়ে ও বিস্ফোরণ ঘটে।
তবে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন যে, নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানিয়েছেন যে, কনটেইনারের ভেতর থাকা রাসায়নিক বস্তুর কারণেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রকৃত হতাহতের তথ্যগুলো জানা যাবে। তিনি জানান যে, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে, এটি প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও অনুভূত হয়েছে।
এদিকে ওয়াশিংটন ইন্সটিউটের সিনিয়র প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফারজিন নাদিমি বলেছেন, নাশকতার হয়নি- এমন তথ্য এখনও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিস্ফোরণে আশেপাশের ভবনের ছাদ ও জানালা উড়ে গেছে এবং পুড়ে গেছে গাড়ি। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের বাসিন্দারা এই বিস্ফোরণের আঁচ পেয়েছেন।
ইরানি বার্তাসংস্থা ইরনা দেশটির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দর, যা হরমুজগানের প্রাদেশিক রাজধানী বন্দর আব্বাস হতে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে ও হরমুজ প্রণালির উত্তরে অবস্থিত। যেখান দিয়ে পৃথিবীর মোট উত্পাদিত তেলের ৫ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়ে থাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org