দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় বাজারে পাওয়া যায় তালশাঁস। এর জনপ্রিয়তাও একেবারে কম নয়। সাদা, নরম, রসালো, তুলতুলে এই ফলটি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে দারুণ উপকারী।

তালশাঁসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন, ফাইবার, খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ এই তালশাঁসে পানির পরিমাণ অনেক বেশি। গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে আইসক্রিম, কোল্ডড্রিংকের বদলে তালশাঁস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। গরমে ডি-হাইড্রেশনের ঝুঁকি অনেক বেশিই থাকে। তালশাঁস শরীরে পানির ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। তালশাঁস শরীরের আর কী কী উপকার করে থাকে? আজ সেটি জেনে নিন।
লিভারের যত্ন নিতে
লিভারে সমস্যা থাকলে তালশাঁস দাওয়াই হিসাবে খাওয়া যেতেই পারে- এমনটিই জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। লিভারের যত্নে নেওয়ার ক্ষেত্রে তালশাঁসের ভূমিকা অনবদ্য। তালশাঁসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলো লিভারের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। লিভারে জমে থাকা টক্সিন বাইরে বের করে দিতেও তালশাঁসের জুড়ি নেই।
আয়রণের ঘাটতি পূরণে তালশাঁস
শরীরে আয়রণের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। আর তাই অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি কমাতে আয়রণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। তালশাঁসে আয়রণ রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। শরীরে আয়রণের ঘাটতি থাকলে গরমে বেশি করে তালশাঁস খেতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা
বর্তমান সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকের নিত্যসঙ্গী। সাধারণ ঘরোয়া টোটকায় কাজ না হলে, ভরসা রাখুন এই তালশাঁসের উপর। তালশাঁসে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমাধান করতেও সক্ষম। আবার ফাইবার রয়েছে বলে হজমজনিত গোলমালও দূরে থাকে। অন্ত্রের জন্যেও তালশাঁস অনেক উপকারী।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে
হয়তো আপনার গরমে জিমে যেতে ইচ্ছা করছে না? ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে পারেন এই তালশাঁস। কারণ হলো রোগা হওয়ার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখার জন্য ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া ভীষণভাবে জরুরি। তালশাঁস খেলে এই দুই শর্ত পূরণ হয়ে যাবে। তাই গরমে ওজন হাতের মুঠোয় রাখতে মন ভরে খান তালশাঁস খেতে পারেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org