দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীরচর্চার প্রতি অনীহা, খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল- এমন নানা কারণে ঘরে ঘরে কোলেস্টেরলের রোগীও বাড়ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জিনগত কারণও দায়ী।

এলডিএল কিংবা খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির অর্থ হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আজকাল ৩০ বছরেরও কম বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে হাই কোলেস্টেরলের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ওষুধ খেতে হয়। বদল আনতে হয় লাইফস্টাইলও। বিশেষত: খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিশেষত সচেতনও থাকতে হয়। কিছু নিরামিষ খাবার রয়েছে, যা নিয়মিতভাবে খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ রাখী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘হাই কোলেস্টেরলের মতোই একাধিক মেটাবলিক সিন্ড্রোমে নিরামিষ খাবার খাওয়া ট্রেন্ডে পরিণত রয়েছে।’ আসলে নিরামিষ খাবারে কোলেস্টেরল থাকে না ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিয়ট্রিয়েন্টসে ভরপুর হয়। তাই এই খাবার এতো বেশি পপুলার। ‘উদ্ভিজ্জ খাবারে স্টেরল এবং স্ট্যানল থাকে, এই দুই উপাদান রক্তে কোলেস্টেরল শোষণে বাধাও দেয়’।
ওটস
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হলে ওটস খেতে পারেন। এই খাবারে বিটা-গ্লুকান নামে দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ওটস প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় ও দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। ওটসের সঙ্গেসঙ্গে ডালিয়া, কিনোয়ার মতো খাবার রাখতেও পারেন।
বিভিন্ন ধরনের ডাল
মুসুর, মুগ, কাবুলি চানা, ছোলার ডাল ইত্যাদি প্রতিদিনের ডায়েটে রাখুন। ডালের মধ্যে ফাইবার এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও রয়েছে। দিনে ১ কাপ ডাল খেলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ৫ শতাংশ পর্যন্ত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারবেন।
আমন্ড
ব্রেকফাস্টে ১০টা ভেজানো আমন্ড খেলেও কোলেস্টেরল বশে থাকবে। আমন্ডের মধ্যে হেলদি ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এই বাদাম শরীরের প্রদাহ কমায় ও হজম স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। আমন্ডের মধ্যে ভিটামিন ই রয়েছে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলকে বাড়তে দেয় না ও রক্তনালিতে প্লাক জমতেও দেয় না।
গ্রীষ্মকালীন সব্জি
এই মৌসুমে বাজারে লাউ, কুমড়া, পটল, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙের মতো সব্জিও পাওয়া যায়। এগুলো নিয়মিত খেলেও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। শাকসব্জির মধ্যে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকিও প্রতিরোধ করে। এ ছাড়াও মৌসুমি ফল খেতেই পারেন ইচ্ছে করলে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org