দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত এবং সুস্থ ঘুম অপরিহার্য। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ৫ থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুদের প্রায় ৯ থেকে ১১ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন, যেখানে কিশোর ও নবজাতকদের ঘুমের চাহিদা আরও বেশি।

ঘুমের অভাব শিশুদের মনোযোগ, মেমোরি, ইমিউন সিস্টেম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাচ্চাদের ঘুম নিশ্চিত করতে বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।
প্রথমত: নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একই সময়ে বাচ্চাদের শুতে পাঠানো এবং একই সময়ে জাগানো তাদের শরীরের সার্কেডিয়ান রিদম বা ঘুম–জাগরণের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি সঠিক রাখে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে রুটিনভিত্তিক ঘুম শিশুদের মানসিক চাপ কমাতে এবং ঘুমের গভীরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
দ্বিতীয়ত: ঘুমের আগে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ঘরে অতিরিক্ত আলো, উচ্চ শব্দ, অথবা টেলিভিশন ও মোবাইলের স্ক্রিন আলো শিশুর ঘুমকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই ঘুমানোর আগে শিশুরা যেন হালকা আলোতে থাকে, শান্ত সঙ্গীত বা গল্প শোনে তা ঘুমের মান উন্নত করে।
তৃতীয়ত: শিশুর খাদ্যাভ্যাসও ঘুমের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। সন্ধ্যার খাবার হালকা ও সহজপাচ্য হওয়া উচিত। অতিরিক্ত চিনি বা ক্যাফেইনযুক্ত খাবার শিশুর ঘুমের গুণমান কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, পর্যাপ্ত শারীরিক কার্যক্রম যেমন খেলা ও ব্যায়াম দিনের মধ্যে শিশুর ঘুমকে প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত করে।
চতুর্থত: অভিভাবকের স্নেহ ও নিরাপত্তার অনুভূতিও শিশুর ঘুমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুরা নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করলে তারা সহজে এবং দীর্ঘক্ষণ ঘুমাতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা প্রমাণ করেছে যে শিশুকে শুতে যাওয়ার আগে গল্প বলা বা আলতো আলতোভাবে আলিঙ্গন করা ঘুমের মান বাড়ায়।
ঘুমের সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ঘুমের ঘাটতি বা অনিয়মিত ঘুম শিশুর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে সমাধান না করলে বড় হওয়ার সময় শিশু উদ্বেগ, মনোযোগহীনতা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা ভোগ করতে পারে।
বাচ্চাদের সুস্থ ঘুম নিশ্চিত করতে নিয়মিত রুটিন, শান্ত পরিবেশ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যক্রম এবং নিরাপত্তার অনুভূতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই উদ্যোগগুলি শিশুর সার্বিক বিকাশকে সমৃদ্ধ করে এবং তাদের সুস্থ মানসিক ও শারীরিক জীবন নিশ্চিত করে।
বাচ্চাদের সুস্থ ঘুমের জন্য টিপস
# নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন।
# প্রতিদিন একই সময়ে শোয়ান এবং জাগান।
# রুটিন শিশুর ঘুমের ঘড়িকে সঠিক রাখে।
# শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করুন।
# ঘরে অতিরিক্ত আলো বা শব্দ কমান।
# শোয়ার আগে টিভি, মোবাইল বা গেম ব্যবহার সীমিত করুন।
# শারীরিক কার্যক্রম বাড়ান।
# দিনের মধ্যে খেলা বা ব্যায়াম করতে দিন।
# শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ঘুমকে প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
সঠিক খাবার দিন
# সন্ধ্যার খাবার হালকা ও সহজপাচ্য রাখুন।
# চিনি বা ক্যাফেইনযুক্ত খাবার সীমিত করুন।
# নিরাপত্তা ও স্নেহ প্রদর্শন করুন।
# গল্প বলুন বা আলতো আলিঙ্গন করুন।
# শিশুরা নিরাপদ বোধ করলে সহজে ঘুমায়।
# ঘুমের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
# ঘুমের অনিয়ম বা ঘাটতি দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। সূত্র: চ্যাট জিপিটি।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org