দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই সময় গ্যাসট্রিক কিংবা অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি মূলত পেটে অতিরিক্ত এসিড উৎপন্ন হলে কিংবা খাবার হজমে সমস্যা হলে ঘটে।

গ্যাসট্রিক দীর্ঘমেয়াদে অস্বস্তি, পেটব্যথা, বুকজ্বালা, ঢেঁকুর ও হজমের গণ্ডগোল তৈরি করতে পারে। তবে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন ও নিয়ম মেনে চললে গ্যাসট্রিক থেকে সহজেই মুক্ত থাকা সম্ভব।
খাবারের অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
খাবারের অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। অনিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়া গ্যাসট্রিকের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয় এবং অ্যাসিড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, মসলাযুক্ত ও ঝাল খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি। কারণ এসব খাবার পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড তৈরি করে। আবার হালকা ও পুষ্টিকর খাবার যেমন- ভাত, ডাল, শাকসবজি, মাছ ও ফলমূল নিয়মিত খাওয়া গ্যাসট্রিক প্রতিরোধে কার্যকর।
চা, কফি ও কার্বনেটেড পানীয় কমান
অতিরিক্ত চা, কফি ও কার্বনেটেড পানীয় কমানো প্রয়োজন। এসব পানীয় পাকস্থলীতে এসিড উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। একইভাবে ধূমপান ও মদ্যপান গ্যাসট্রিকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়। তাই এগুলো সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত।
খাবারের পরপরই শোবেন না
খাবারের পরপরই শোয়া যাবে না। খাবার খাওয়ার অন্তত ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর শোয়া ভালো। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে খাদ্য ও এসিড ওপরে উঠে বুক জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে রাতে ঘুমানোর সময় মাথার দিক সামান্য উঁচু করে শোয়া উপকারী।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করুন
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মানসিক চাপ পেটের এসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে গ্যাসট্রিকের সমস্যা বাড়ায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, ধ্যান কিংবা অবসর বিনোদনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমাতে হবে।
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করে এবং গ্যাসট্রিক প্রতিরোধ করে। দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকা ও অলস জীবনযাপন এড়িয়ে চলা উচিত।
ওষুধ সেবনে সতর্কতা
ওষুধ সেবনে সতর্ক থাকতে হবে। কিছু ব্যথানাশক ওষুধ বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন খেলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই যেকোনো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
গ্যাসট্রিক থেকে বাঁচতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত জীবনযাপন, মানসিক প্রশান্তি এবং শারীরিক সক্রিয়তা অপরিহার্য। যারা এগুলো মেনে চলেন, তারা খুব সহজেই গ্যাসট্রিকজনিত অস্বস্তি থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। তবে গ্যাসট্রিকের সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, অবশ্যই বেশি সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org