দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেটের মেদ বা মেদভুড়ি বর্তমান সময়ে একটি সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেরই পেটের চারপাশে চর্বি জমে যায়।
মেদভুড়ি শুধু শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করে না, বরং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে এই মেদভুড়ি নিয়ন্ত্রণ ও কমানো সম্ভব।
প্ল্যাঙ্ক (Plank)
প্ল্যাঙ্ক একটি কার্যকরী ব্যায়াম, যা মূলত অ্যাবডোমিনাল মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে। এতে শরীরের ভর হাত ও পায়ের আঙুলের উপর ধরে রাখতে হয়। প্রতিদিন কয়েক মিনিট প্ল্যাঙ্ক করলে পেটের মেদ দ্রুত কমতে সাহায্য করে এবং শরীরের ভঙ্গিমা উন্নত হয়।
ক্রাঞ্চেস (Crunches)
পেটের মেদ কমানোর জন্য সবচেয়ে পরিচিত ব্যায়াম হলো ক্রাঞ্চেস। মেঝেতে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে মাথা ও কাঁধ সামনের দিকে তোলার মাধ্যমে এটি করা হয়। নিয়মিত ১৫–২০ বার করে কয়েক সেট অনুশীলন করলে পেটের চর্বি গলতে শুরু করে।
সাইকেল এক্সারসাইজ (Bicycle Exercise)
এটি করার সময় মেঝেতে শুয়ে পা সাইকেল চালানোর মতো নড়াচড়া করতে হয়। এই ব্যায়ামে নিচের পেটের অংশের চর্বি দ্রুত কমে এবং কোমরের মাংসপেশি শক্ত হয়।
মাউন্টেন ক্লাইম্বার (Mountain Climbers)
এই ব্যায়ামে হাত দিয়ে ভর দিয়ে শরীরকে প্ল্যাঙ্ক অবস্থায় রেখে পা দ্রুত সামনে-পেছনে আনা হয়। এটি কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের মতো কাজ করে, ফলে ক্যালোরি দ্রুত পোড়ে এবং পেটের মেদ ঝরে যায়।
দৌড়ানো বা জগিং (Running or jogging)
পেটের মেদ কমাতে কেবল অ্যাবডোমিনাল ব্যায়ামই নয়, পুরো শরীরের জন্য ক্যালোরি খরচ করাও জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ২০–৩০ মিনিট দৌড়ালে বা জগিং করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি কমে যায় এবং পেটের চর্বিও হ্রাস পায়।
যোগব্যায়াম (Yoga)
যোগব্যায়ামের কিছু আসন যেমন ভূজঙ্গাসন, নৌকাসন, ধনুরাসন ইত্যাদি পেটের মেদ কমাতে কার্যকর। এগুলো শরীর ও মনের প্রশান্তি আনার পাশাপাশি হজমশক্তি বাড়ায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT)
স্বল্প সময়ে কার্যকর ফল পেতে HIIT একটি চমৎকার ব্যায়াম পদ্ধতি। এতে স্বল্প সময়ের জন্য উচ্চমাত্রার দৌড়, জাম্পিং জ্যাকস বা বার্পিজ করা হয়, তারপর কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া হয়। এটি শরীরের চর্বি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে।
শেষ কথা
মেদভুড়ি কমানোর জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি। কেবল ব্যায়াম করলেই নয়, বরং চিনি, ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, বেশি পানি পান করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করাও প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট নির্দিষ্ট ব্যায়াম করলে ধীরে ধীরে পেটের মেদ যেমন নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং তেমনি সুস্থ, ফিট শরীর পাওয়া সম্ভব।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫ 3:09 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা তার বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন-“ফ্লোটিং…
View Comments
Simple and effective explanation of the tips... Thanks again.