দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া একটি প্রাণঘাতী শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যা দ্রুত শনাক্ত এবং চিকিৎসা না হলে মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। তাই অভিভাবকদের সচেতনতা এবং দ্রুত পদক্ষেপই শিশুদের সুস্থতার মূল চাবিকাঠি।
নিউমোনিয়া হলে সাধারণত শিশুর কাশি বেড়ে যায়, জ্বর দেখা দেয় এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। শ্বাসের গতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, বুক ভেতরে দেবে যাওয়া, ঠোঁট বা নখ নীলচে হওয়া- এইসব উপসর্গ গুরুতর সংকেত। অনেক সময় শিশুর খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়, শিশুটি খুব দুর্বল হয়ে পড়ে বা অবিরাম কান্না করে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
প্রথম করণীয় হচ্ছে দ্রুত ডাক্তার দেখানো। শিশুর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন এবং ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন। ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া হলে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না; সেক্ষেত্রে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ এবং সাপোর্টিভ কেয়ারই যথেষ্ট। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনই শিশুকে নিজ উদ্যোগে কোনো ওষুধ দেওয়া উচিত নয়।
শিশুকে পর্যাপ্ত পানি এবং তরল খাদ্য দিতে হবে। নিউমোনিয়া হলে শরীর সহজেই ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। তাই পানি, স্যুপ, ওরস্যালাইন বা তরল খাবার শিশুর শরীরকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তবে জোর করে খাওয়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। অল্প অল্প করে, বারবার খাওয়ানোই উত্তম।
জ্বর এবং ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল দিতে পারেন, তবে অবশ্যই সঠিক ডোজ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। শ্বাসকষ্ট বেশি হলে শিশুকে সোজা করে বসিয়ে রাখলে অনেক সময় শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ হয়। ঘরের পরিবেশ পরিষ্কার, ধুলো-মুক্ত এবং বাতাস চলাচলযোগ্য রাখতে হবে। ঠান্ডা বা ধোঁয়া-ধুলাবালি পরিবেশ থেকে শিশুকে দূরে রাখা জরুরি।
অক্সিজেন লাগলে দেরি করা যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে শিশুর শরীরে অক্সিজেন লেভেল কমে যেতে পারে। যদি শ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হয় বা শিশুর মুখ-ঠোঁট নীলচে হয়ে যায়- তাহলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অক্সিজেন থেরাপি শিশুকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
প্রতিরোধই নিউমোনিয়া থেকে শিশুকে রক্ষার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। সঠিক টিকা- বিশেষ করে পিসিভি (PCV) এবং হিব (Hib) ভ্যাকসিন- শিশুকে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমায়। পাশাপাশি শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা, ধূমপানের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখা, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো ও নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস- সবই নিউমোনিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অভিভাবকদের উচিত শিশুদের অসুস্থতার প্রথম লক্ষণেই সচেতন হওয়া ও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। সময়মতো চিকিৎসা এবং সঠিক যত্নই শিশুকে নিউমোনিয়ার মারাত্মক পরিণতি থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on নভেম্বর ২৫, ২০২৫ 4:54 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…