দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (বুধবার) ২টায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা হবে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। পরে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে।

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা আজ (বুধবার) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে সাড়ে ৩টার দিকে তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজধানীর জিয়া উদ্যানে তার স্বামী শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই দাফন করা হবে। এই জানাজা পড়াবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ এবং কূটনীতিকরা জানাজায় অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং গতকালই জানিয়েছে, দাফন ও সংশ্লিষ্ট আনুষ্ঠানিকতায় নিরাপত্তাজনিত কারণে দাফনের সময় সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক দাফন সম্পন্ন হওয়ায় সাধারণ জনগণের প্রবেশ নিষিদ্ধ রাখা হয়। শুধু আমন্ত্রিত ব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্টদের অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজা এবং দাফনস্থলে কোনো ধরনের ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে প্রেস উইং।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় এবং রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে মরদেহ আনা হবে দক্ষিণ প্লাজায়; রাস্তার দুই পাশে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভা হয়। সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ আজ সকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হবে। এই সময় রাস্তার দুই পাশেই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জানাজা সংক্রান্ত সকল কিছু পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে এবং সম্প্রচার করবে বিটিভি। পুলিশের পক্ষ হতে বলা হয়, নিরাপত্তায় কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সেনাবাহিনী থাকবে। প্রেস সচিব আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে সমন্বয় করে জানাজার আয়োজন করা হবে। এই সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সংসদ, বাংলাদেশের দূতাবাস, বিএনপির পার্টি অফিসে শোক বই খোলা হবে।
এদিকে ভোর থেকে প্রচুর মানুষ সংসদ ভবনের সামনে আসতে শুরু করেছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জনতার ঢল নেমেছে সংসদ ভবন এলাকায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org