ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ লাশ তুলে ভিসেরা রিপোর্ট করার পর এবার সাগর-রুনির পরিবারের সঙ্গে তাদের একমাত্র সন্তান মেঘকে র্যাব হেডকোয়ার্টারে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বহুল আলোচিত এই সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যাকাণ্ডের মামলায় রোডম্যাপ তৈরি করে তদন্ত চালাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। একই সঙ্গে ওই জোড়া খুনের নেপথ্যের রহস্য ও খুনিদের শনাক্ত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে র্যাবের আমন্ত্রণে চলতি সপ্তাহে র্যাব হেডকোয়ার্টারে নিহত রুনীর পরিবারের সদস্যরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করবেন। মামা নওশের ও নানীর কোলে চড়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত দম্পতির একমাত্র শিশু সন্তান মেঘও র্যাব সদর দফতরে যাবে বলে জানা গেছে। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হবে। এর আগে ৯ মে নিহত সাগরের পরিবারের ছয় সদস্য র্যাব সদর দফতরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন। অন্যদিকে সাগর-রুনীর ভিসেরা টেস্টের রিপোর্ট দু-একদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে বলেও র্যাব সূত্র জানিয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল বলেছেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে র্যাব সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যা মামলার তদন্ত করছে। প্রথম থেকেই একটি রোডম্যাপ তৈরি করে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে নিহত দুই সাংবাদিকের ভিসেরা টেস্টের রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত কর্মকর্তা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সূত্র জানায়, আদালত তথা জনগণের আস্থা অর্জন করতে র্যাব প্রথম থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাগর-রুনীর হত্যার তদন্ত শুরু করে। এজন্য তারা প্রথমেই একটি রোডম্যাপ তৈরি করে। সেই অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করতে র্যাবের তিন পরিচালককে দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই তিন সিনিয়র কর্মকর্তা নিয়মিত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র এএসপি জাফর উল্লাহকে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। সূত্র জানায়, র্যাব নিশ্চিত হতে চায় হত্যার আগে ওই দুই সাংবাদিককে নেশা জাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কিনা। যদি তাই হয় তাহলে বোঝা যাবে এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল ৭৫ দিন পর কবর থেকে লাশ তুলে ভিসেরা টেস্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করে। সিআইডির অধীন মহাখালী রাসায়নিক পরীক্ষাগারে ওই পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে নিহত রুনীর পরিবারের সদস্যদের র্যাব সদর দফতরে আমন্ত্রণ জানাবেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী নিহত দম্পতির শিশুপুত্র মেঘসহ পরিবারের সদস্যরা র্যাব প্রধান কার্যালয়ে যাবে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের রাতের ও পূর্বেকার বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। একই সঙ্গে তাদের দৃষ্টিতে সন্দেহভাজন কোন আসামি রয়েছে কিনা তা জানতে চাইবে তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে তদন্তভার পাওয়ার পর র্যাবের একটি দল রুনীদের বাসায় গিয়েছিলেন। সে সময় র্যাব কর্মকর্তারা মামলার বাদী রুনীর ভাই নওশের আলম রোমান, তার মা ও শিশু মেঘের সঙ্গে কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় সমপ্রতি র্যাব এই তদন্তের ভার গ্রহণ করে। র্যাবের হাতে তদন্তভার আসার পর সাগর-রুনির পরিবার আসামীদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশা করছে।