ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে কলঙ্কের কালিমালিপ্ত দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কতিপয় চক্রান্তকারী সেনাসদস্যরা সপরিবারের নির্মমভাবে হত্যা করে।
রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের নারী-শিশুরাও সেদিন রেহায় পায়নি ঘাতকদের হাত থেকে। বাংলাদেশের ইতিহাসের নৃশংসতম ও মর্মস্পর্শী সেই হত্যাকাণ্ডের আজ ৩৭তম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতি আজকের এই শোকবহ দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে।
অতীতে নানা রকম বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে ১৫ আগস্ট পালিত হলেও এখন আর সে পরিস্থিতি নেই। আদালতের রায়ে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সাল থেকে সরকারিভাবে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তবে ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিল করেছিল। পরে আওয়ামীলীগ তথা মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে এবং এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও ঘাতকের বুলেট সেদিন কেড়ে নিয়েছিল তাঁর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুছেলে শেখ রাসেল, পুত্রবধু সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্ণেল জামিলের প্রাণ। দেশের বাইরে থাকায় ঘাতক চক্রের হাত থেকে সেদিন বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
জাতির জনকের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনগুলো দিনব্যাপি কোরআন খানি, স্মরণসভা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
আজকের কর্মসূচি
আজ জাতীয় শোক দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোয়ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং আয়োজন করা হবে আলোচনা সভার। সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং সশস্ত্র বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করবে। এসময় বিশেষ মোনাজাত করা হবে। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। দলের নেতারা সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফাতেহা পাঠ এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বেলা ১১টায় মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন রয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আরও রয়েছে- বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এছাড়াও বাদ আসর দেশের সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও জেলায় মিলাদ এবং ইফতার মাহফিলের আয়োজন করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।