দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সৌরজগতে লাল গ্রহ বলে পরিচিত মঙ্গল গ্রহে নাসা প্রেরিত মহাকাশ যান কিউরিসিটি দশ মাসেরও অধিক সময় ধরে অবস্থান করছে। মহাকাশ যানটির বর্তমান চূড়ান্ত লক্ষ্য মাউন্ট শার্প নামের পর্বত। নানা কৌতুহলের জন্ম দিয়ে কিউরিসিটি মাউন্ট শার্প অভিমুখে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত ৬ মাস ব্যাপী কিউরিসিটি মঙ্গল গ্রহের Glenelg নামক অঞ্চলে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় মহাকাশ যানটি নতুন কিছু ছবি এবং ডাটা নাসায় প্রেরণ করেছে। সেখানে মাউন্ট শার্প নামক মঙ্গল গ্রহের পর্বত এর ছবিও ছিল।
মাউন্ট শার্প হচ্ছে কিউরিসিটির এখনকার মূল্য লক্ষ্যস্থল। পর্বতটি উচ্চতায় ৫.৫ কিলোমিটিার (১৮, ০০০ ফিট) এবং গেইল আগ্নেয়গিরী থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এই মুহূর্তে কিউরিসিটি Glenelg নামক অঞ্চলেই অবস্থান করছে আরো বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করার স্বার্থে। এখানকার কাজ শেষের পর কিউরিসিটি মাউন্ট শার্প পর্বত অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে।
কিউরিসিটির বর্তমান অবস্থান গ্লেনেল্গ থেকে মাউন্ট শার্প এর দূরত্ব ৫ মাইল। মাউন্ট শার্পের দিকে যাবার আগে নাসা কিউরিসিটির যন্ত্রপাতি ঠিক মতন কাজ করছে কিনা যাচাই করে দেখতে চান। প্রতিটি আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতির বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেগুলো শুরুর দিকের অবস্থার মতন করা হবে। নাসার মহাকাশ যানটি শুরু থেকেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। নাসা এগুলো সমাধান করতেও সক্ষম হয়। তারপরও নাসা চায় কিউরিসিটিকে আরো সক্ষম করে তুলতে। মাউন্ট শার্প এর অভিমুখে যাত্রা শুরুর আগে নাসা খুবই সতর্ক থাকতে চায়। কিছু কম্পিউটারজনিত সমস্যা মহাকাশ যানটি তে দেখা দিয়েছিল। ট্রানসমিট কমান্ড এ যাতে কোন সমস্যা না হয় এবং মেমোরি ঠিক মতন কাজ করে এগুলো বার বার যাচাই করেছেন নাসা বিশেষজ্ঞরা।
ইতোমধ্যে কিউরিসিটি মঙ্গল গ্রহের সম্ভাব্য প্রাণ উপযোগী পরিবেশ বিষয়ে শক্তিশালী প্রমাণ পেয়েছে। অপর দিকে ২০০৩ সালে প্রেরিত অন্য একটি মহাকাশ যান অপরচুনিটি পান করার উপযোগী পানি’র খোঁজ পেয়েছিল। সব কিছু বিবেচনা করে নাসা মনে করে, মঙ্গল গ্রহ থেকে জানার অনেক কিছুই বাকী আছে যা মঙ্গল গ্রহ থেকেই জানা যাবে। মাউন্ট শার্প এ অনুসন্ধান এর মধ্য দিয়ে বের হয়ে আসতে পারে আরো অনেক অজানা তথ্যই। যদিও মাউন্ট শার্প পর্বতটি পাথর এবং মাটির অনেকগুলো স্তর নিয়ে গঠিত। কিউরিসিটি এই স্তর ভেদ করে তথ্য অনুসন্ধান করার চেষ্টা করবে। ধারণা করা হচ্ছে অনেক অভ্যন্তরীণ গোপন ইতিহাস এর সন্ধান দিতে পারে এই মাউন্ট শার্প খনন।
নাসা এর মতে কিউরিসিটি এখন সম্পূর্ণরূপে কার্যোপযোগী আছে। তারপরও নাসা এই মাউন্ট শার্প অভিমুখে কিউরিসিটি যাত্রায় কোন ঝুঁকি নিতে চায় না। প্রকৃত পক্ষে, যত বেশি ডাটা সংগ্রহ করা সম্ভব নাসা তাই করবে। যাত্রা শুরু করলে মাউন্ট শার্প পৌছাতে কিউরিসিটির প্রয়োজন হবে ৪ মাসের মত। নতুন তথ্য এবং ছবি পেতে হলে তাই অপেক্ষা করতে হবে এই সময় পর্যন্ত। এখন দেখার বিষয় কিউরিসিটি নতুন করে আর কি কৌতুহলের জন্ম দেয়।
তথ্যসূত্র: দি টেক জার্নাল